খেলাধুলা

বৃষ্টির জন্য আর খেলাই হলো না, অপেক্ষা বাড়লো বাংলাদেশের

চতুর্থদিনের শেষ সেশনে খেলা হলো মাত্র ১ ওভার। আরও প্রায় ২৮-২৯ ওভার খেলা হলো না। বৃষ্টির কারণে দিনের খেলার এ জায়গাতেই সমাপ্তি টানতে হলো। বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৪২। আরও ১৪৩ রান করতে হবে শেষ দিনে।

Advertisement

আজ তৃতীয় সেশনের বাকি ওভারগুলো খেলা হলে, জয়ের আরও অনেক কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারতো টাইগাররা। খেলা না হওয়ায় নিশ্চিতভাবেই অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হলো টাইগার সমর্থকদের।

রাওয়ালপিন্ডিতে শেষ দিনেও কী স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারবে টাইগাররা? আপাতত সে সম্ভাবনা কম। পাকিস্তানের এই শহরটির আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে।

তবে, দুই সেশনের খেলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে যদি ১৪৩ রান তুলতে পারে টাইগাররা, তাহলে প্রথমবারের মত পাকিস্তানের মাটিতে তাদেরকেই হোয়াইটওয়াশ করার দারুণ সুযোগ পাবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

Advertisement

পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট করে দেয়ার পর বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫ রানের। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হাত খুলে খেলছে বাংলাদেশের দুই ওপেনার। ৭ ওভার ব্যাট করে ৪২ রান তোলেন সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। এর মধ্যে আলোর স্বল্পতা দেখা দেয়ায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরই রাওয়ালপিন্ডির আকাশ থেকে নামে বৃষ্টি। যে কারণে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যকার শেষ টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনের খেলা আর মাঠেই গড়ায়নি।

বৃষ্টির আগে মারকুটে খেলেছেন জাকির। তিনি অপরাজিত আছেন ২৩ বলে ৩১ রান করে। সাদমান খেলছেন দেখেশুনে। ১৯ বলে ৯ রান করে উইকেটে আছেন তিনি। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আর মাত্র ১৪৩ রান। ড্র করতে পারলে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড করবে বাংলাদেশ।

সোমবার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট পাকিস্তান। নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদের তোপের মুখে মাত্র ৪৬.৪ ওভার ব্যাট করতে পেরেছে স্বাগতিকরা। আগের দিনের ২ উইকেটে ৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। তখন স্বাগতিকদের লিড ছিল ২১ রানের।

দিনের শুরুতে দেখেশুনে ব্যাটিং করে পাকিস্তান। ৩৮ রানের জুটি করেন সাইম আইয়ুব ও শান মাসুদ। তাসকিন আহমেদ ২০ রান নিয়ে খেলা সাইমকে ফেরালে জুটি ভাঙে। ডানহাতি পেসারের ফুল লেন্থের বল মিড অফে ড্রাইভ করছিলেন সাইম। বাঁ-পাশে সামান্য ঝাঁপিয়ে পড়ে বল তালুবন্দি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৪৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান।

Advertisement

দল চাপে থাকলেও স্বভাবসুলভ হয়ে ওয়ানডে মেজাজেই খেলছিলেন মাসুদ। সতর্কতার পাশাপাশি বাউন্ডারিও নিচ্ছিলেন তিনি। তবে পাকিস্তান অধিনায়কের বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলার তত্ত্ব বেশিক্ষণ কার্যকর হতে দেননি নাহিদ রানা। শর্ট লেন্থের বল দিয়ে মাসুদকে (৩৪ বলে ২৮) উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান টাইগার পেসার।

ব্যাক টু ব্যাক বোলিংয়ে এসে বাবরের উইকেটও তুলে নেন রানা। প্রথম স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতের ক্যাচ হন বাবর (১৮ বলে ১১)।

এরপর সউদ শাকিলকে সাজঘরের পথ দেখান রানা। তাকে বিহাইন্ড দ্য উইকেটে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে তৃতীয় শিকার তুলে নেন টাইগার পেসার। মাত্র ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তানের সহ-অধিনায়ক। ৮১ রানেই ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

এরপর পাকিস্তানকে টেনে নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। সালমান আলি আগাকে নিয়ে ৫০ রানের জুটি করেন তিনি। যে কারণে রিজওয়ান হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের পথের কাঁটা। হঠাৎ জোড়া আঘাত করেন হাসান মাহমুদ।

ফিফটির দিকে (৭৩ বলে ৪৩) ছুটতে থাকা রিজওয়ানকে লিটনের ক্যাচ বানান হাসান। পরের বলেই নতুন ব্যাটার মোহাম্মদ আলিকে (১ বলে ০) শান্তর তালুতে বন্দি করেন টাইগার পেসার। ওভার শেষ হওয়ার কারণে হ্যাটট্রিক বল করতে পারেননি তিনি। সাকিব আল হাসানের ওভারকে স্যান্ডউইচ বানিয়ে পরের ওভারে বোলিং আসলেও হ্যাটট্রিক পাননি ডানহাতি পেসার।

এরপর আবরার আহমেদকে (১২ বলে ২) ইনিংসের চতুর্থ শিকার বানান রানা। তাকে শান্তর ক্যাচ বানান এই ডানহাতি।

পাকিস্তানের সর্বশেষ উইকেট শিকার করে ফাইফার পূর্ণ করেন হাসান। পঞ্চম উদযাপনে হাসানকে একটু সময় নিতে হলো। অন-ফিল্ড আম্পায়ার এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত দিলেও রিভিউ নেন মীর হামজা। তৃতীয় আম্পায়ারও জানালেন এটি আউট। হামজার (১০ বলে ৪) বিদায় নিশ্চিত হলে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ফাইফার উদযাপন করেন হাসান। ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন সালমান আলি আগা।

বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ নেন ৫ উইকেট। আরেক পেসার নাহিদ রানা শিকার করেন ৪ উইকেট। বাকি ১ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ।

আইএইচএস/