ক্যাম্পাস

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে ধানের চারা দেবে বাকৃবি

বন্যা পরবর্তী খাদ্য সংকট মোকাবিলায় ‘লেইট আমন’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিনামূল্যে নাবী আমন ধানের চারা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বীজ বপনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান।

তিনি জানান, ২৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা মাঠের এক একর জমিতে ও ৩১ আগস্ট খামার ব্যবস্থাপনা শাখার দেড় একর জমিতে মোট ৮০০ কেজি ধানের বীজ বপন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান বলেন, আকস্মিক বন্যায় ডুবে নষ্ট হয়েছে রোপা আমন ধানের চারা এবং বীজতলা। কিছুদিন পর বন্যার পানি নেমে গেলেও চারা তৈরি করতে অন্তত এক মাসের মতো সময় লাগবে। এতে আমন ধান লাগানোর সময় পার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার বন্যার কারণে চারা তৈরি করতে না পারলে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে। তাই খাদ্য সংকটের কথা মাথায় রেখে আমাদের শিক্ষার্থীরা বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধানের চারা দিয়ে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছে।

Advertisement

শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে সফল করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বীজ কোম্পানি ও কৃষি উদ্যোক্তারা একত্রিত হয়ে ‘অ্যাগ্রি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স বিডি’ গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানা যায়।

লেট আমন প্রকল্পে বাকৃবিতে ৫ একর, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ১ একর, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৪ একর এবং লক্ষ্মীপুরে ২ একরসহ মোট ১২ একর জমিতে বীজ বপন করে ১০০০ কৃষককে বিনামূল্যে চারা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ১২ একর জমিতে উৎপাদিত চারা দিয়ে সর্বনিম্ন ৭৬০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করা যাবে।

১৮ থেকে ২০ দিন পর ধানের চারা গজাবে বলে আশাবাদী শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকদের কাছে বিনামূল্যে সেসব চারা পৌঁছে দেবেন।

অ্যাগ্রি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স বিডি সংগঠনটির সূত্রে জানা যায়, বায়ার বাংলাদেশ দুই লাখ ৬৫ হাজার টাকা সমমূল্যের ৫০০ কেজি ধানী গোল্ড হাইব্রিড জাতের বীজ এবং বাকৃবির ৯৬-৯৭ সেশনের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘কৃষিবিদ ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যানিটি’র পক্ষ থেকে লেট আমন প্রকল্পে দুই লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এছাড়া প্রকল্প সফল করতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ময়মনসিংহ শাখা এক টন, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা থেকে ১৫০ কেজি বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা যায়।

লেট আমন প্রকল্পে কাজ করা শিক্ষার্থী বকুল আলী বলেন, বাকৃবিতে ৫ একর, নোবিপ্রবিতে ১ একর, চট্রগ্রামের হাটহাজারিতে ৪ একর ও লক্ষ্মীপুরে ২ একরসহ মোট ১২ একর জমিতে নাবি আমন ধানের চারা উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা। উৎপাদিত চারাগুলো বন্যাকবলিত সহস্রাধিক কৃষকদের মাঝে বিতরণ করবো।

নেত্রকোনার মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান বলেন, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চারাগুলো বিতরণ করবো। আশা করছি প্রায় ১০০০ কৃষককে চারা বিতরণের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারবো। প্রতি কৃষককে প্রায় এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করার জন্য চারা বিতরণ করবো।

আসিফ ইকবাল/জেডএইচ/এএসএম