লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মা ওহিদা বেগমকে বেঁধে রেখে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন জাবেদ হোসেন (২৮) নামে এক মাদকাসক্ত যুবক। পরে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে ওহিদাকে উদ্ধার করেন। তবে আগুনে আসবাবপত্রসহ পুরো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
Advertisement
ওই ঘরটিই ছিল বিধবা ওহিদার একমাত্র সম্বল। মাদকের টাকা না পাওয়ায় জাবেদ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে ওহিদা রায়পুর থানায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই জাবেদ পলাতক রয়েছেন। এর আগে রোববার ভোর রাত ৪টার দিকে রায়পুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কেরোয়া এলাকায় হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্র জানায়, জাবেদ মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য তিনি তার মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া করতেন। ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করতেন। ওহিদার সংসারে ৬ মেয়ে ও একমাত্র ছেলে জাবেদ। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে টাকার জন্য জাবেদ তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেন। একপর্যায়ে তার গায়ে থাকা জামা দিয়ে ওহিদার গলা পেঁচিয়ে ধরেন। পরে ওহিদাকে ঘরে বেঁধে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যান জাবেদ। এ সময় ওহিদার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করেন।
Advertisement
ওহিদার মেয়ে কামরুন নাহার বলেন, আমার ভাই মাদকাসক্ত। সে ঘরে আগুন লাগিয়েছে। আমরা বিচার চাই। মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে সে। আমাদের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ওহিদা বেগম বলেন, আমার শেষ সম্বল আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে জাবেদ। প্রায়ই টাকার জন্য আমাকে মারধর করতো। আমার মেয়েদের বাড়িতে আসতে দেয় না।
রায়পুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল হোসেন বলেন, ওহিদার ছেলে-মেয়ে সবাই বিবাহিত। তার ছেলে জাবেদের সংসারে এক সন্তান রয়েছে। কিন্তু স্ত্রী-সন্তান তার সঙ্গে থাকে না। ঘটনার রাতে ওহিদার কাছ থেকে তার ছেলে টাকা চেয়েছে শুনেছি। টাকা না দেওয়ায় তাকে বেঁধে রেখে জাবেদ ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনলে পার্শ্ববর্তী ঘরও পুড়ে যেতো।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার আবুল কালাম আজাদ বলেন, একটি ঘরে আগুন লেগেছে। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে ঘরে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
Advertisement
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজল কায়েস/এফএ/জিকেএস