ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের আগামী দুদিনের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে, এমন আশ্বাস দিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত করে চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। তবে শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত না করে শর্তসাপেক্ষে জরুরি সেবা চালু রাখার কথা বলেছেন আন্দোলনকারীরা।
Advertisement
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢামেক হাসপাতালের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে উভয়পক্ষ নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরে।
আরও পড়ুন দোষীদের গ্রেফতারে দুদিন সময় চাইলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ৪ দফা দাবিতে সারাদেশে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’বৈঠক শেষে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ক্যাজুয়ালিটি এবং নিউরো সার্জারিতে চিকিৎসাসহ অন্য চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে কর্মরত ডাক্তারদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
এসময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও চিকিৎসকদের দাবির বিষয়ে যা করা প্রয়োজন তা পূরণে চেষ্টা করা হবে বলে জানান।
Advertisement
তবে এর একটু পরই হট্টগোল শুরু হয় সেখানে। এরপর স্বাস্থ্য উপদেষ্টার আশ্বাসে কান না দিয়ে শুধু আগামী ২৪ ঘণ্টায় শর্তসাপেক্ষে জরুরি স্বাস্থ্য সেবা চালু রাখার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। একজন চিকিৎসকের বিপরীতে একজন নিরাপত্তারক্ষী থাকার শর্তে সারাদেশে জরুরি সেবা চালু হবে বলে উল্লেখ করেন তারা।
এসময় সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন ঢামেক চিকিৎসক ডা. আহাদ ও ডা. সুমন রানা।
চিকিৎসকরা জানান, আমাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলমান। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিটি জরুরি বিভাগে একজন চিকিৎসকের বিপরীতে একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তা দেওয়া সাপেক্ষে শুধু জরুরি বিভাগের সেবা দেওয়া হবে।
এর বাইরে আউটডোর ও ইনডোর সেবা স্থগিত থাকবে। তবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বা হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) সেবা চলমান বলেও জানান তারা।
Advertisement
আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলেন, যদি আগামী পাঁচ মিনিটের মধ্যে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেয় আমরা চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করবো। আগামী সাতদিন এভাবেই স্বাস্থ্যসেবা চলবে। এসময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য পুলিশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন গঠন করলে আন্দোলন স্থগিত করবো।
গতকাল শনিবার দিনগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। হামলার বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে রোববার সকাল থেকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। এরপর চিকিৎসকরা সারাদেশে সব ধরনের চিকিৎসা কেন্দ্রে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন।
এএএম/এমকেআর/জিকেএস