লিটন দাসের অনবদ্য সেঞ্চুরিম, মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ১৬৫ রানের অসাধারণ জুটিতে যখন বাংলাদেশ গিয়ে ২৬২ রানে থামলো, তখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো এদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। আর দিন শেষে স্বাগতিক পাকিস্তানের ২ উইকেট নিয়ে সুখস্মৃতিতে ভাসার অপেক্ষায় তারা।
Advertisement
যেখানে বাংলাদেশকে ফলোঅন করানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলো পাকিস্তান, সেখানে পেলো মাত্র ১২ রানের লিড। এই লিড নিয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে পাকিস্তানের দুই ব্যাটারের উইকেট তুলে নিলেন বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদ।
প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন আবদুল্লাহ শফিক। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ রান করতে সক্ষম হলেন তিনি। কিন্তু হাসান মাহমুদের বলে ব্যাটের কানায় বল লাগিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের গ্লাভসে জমা দেন শফিক। ফলে ৩ রান করে আউট হন তিনি। ব্রেক থ্রু এনে দেন হাসান মাহমুদ।
দলীয় ৭ রানে পড়ে প্রথম উইকেট। পরের ওভারে বল করতে এসে আবারও উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। এবার তিনি আউট করেন নাইটওয়াচ ম্যান হিসেবে মাঠে নামা খুররম শেহজাদকে। সরাসরি বোল্ড হয়ে যান শহজাদ। পাকিস্তারে রান এ সময় ছিল ৯। এরপরই দিনের খেলা শেষ হয়ে যান।
Advertisement
এর আগে অল্পের জন্য লিড নেয়া হয়নি বাংলাদেশের। যে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং লিটন এবং মিরাজ করলেন, তাতে লিড নেয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিলো; কিন্তু পাকিস্তানের করা ২৭৮ থেকে ১২ রান দূরে থাকতেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। ১৩৮ রান করে আউট হন লিটন দাস। শেষ ব্যাটার নাহিদ রানা আগা সালমানের বলে এলবিডব্লিউ হলে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
অথচ, বাংলাদেশ ফলোঅনে পড়ে কি না সে শঙ্কায় ছিল সবাই। ২৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কে ভেবেছিলো, বাংলাদেশের রান ২০০ পার হবে? সবাই তো ধরেই নিয়েছিলো যে, হয়তো বা ফলোঅনেই পড়তে যাচ্ছে টাইগাররা; কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন লিটন দাস।
১৬৫ রানে জুটি গড়ে মিরাজ ৭৮ রান করে আউট হয়ে গেলেও লিটন দাস ঠিকই টিকে রইলেন। শুধু তাই নয়, নিজের ইনিংসটাকে তিন অংকের ঘরও পার করিয়ে দিয়েছেন। আবরার আহমেদকে বাউন্ডারি মেরে ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি করলেন তিনি।
এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লিটন সেঞ্চুরি করলেন, যখন দলের খুব প্রয়োজন ছিল এমন একটা ইনিংস। পাকিস্তানকে ২৭৮ রানে বেধে ফেলার পর বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটে বড় স্কোরের আশা করেছিলো সবাই। কিন্তু ব্যাটারদের একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার কারণে শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলো সবাই।
Advertisement
সেখান থেকে মেহেদী হাসান মিরাজ আর লিটন দাস যেভাবে জুটি গড়ে দাঁড়ালেন, তাতে বিস্মিত হতে হয়েছে পাকিস্তানিদের। এতটা প্রতিরোধ তারা মোটেও আশা করেনি। ২০২২ সালের ২৩ মে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করার পর ৯ ম্যাচ বিরতি দিয়ে ১০ম ম্যাচে আবারও সেঞ্চুরির দেখা পেলেন লিটন।
দলীয় ১৯১ রানে মিরাজ আউট হয়ে জুটি ভাঙার পর লিটন কতক্ষণ টিকবেন তা নিয়ে শঙ্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা দূর করে দিয়ে পেসার হাসান মাহমুদকে সঙ্গে নিয়ে সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি।
আইএইচএস/