পোশাক খাতে স্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ

চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক খাতে স্থিতিশীল শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ইন্ডাস্ট্রিাল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত আইবিসি নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ সহযোগিতা চান বিজিএমইএ নেতারা।

বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আইবিসি নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, পরিচালক রেজাউল আলম (মিরু), আইবিসি এর সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ বাদল, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ও লেদার ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স এর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স লীগের জেড এম কামরুল আনাম, ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কর্স এর সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান এবং বাংলাদেশ মেটাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন।

সভায় কর্নেল মহিউদ্দিন, ডিআইজি মোহাম্মদ আজাদ মিয়া, ডিআইজি আহমেদ বেল্লাল, মো. সারওয়ার আলম, পুলিশ সুপার, ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ, গাজীপুর এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় পোশাক শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয় যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত, পোশাক শিল্পের জন্য এক নতুন বাস্তবতা নিয়ে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো পোশাক শিল্পের রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রম এবং কারখানার উৎপাদন কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব রেখেছে। শিল্পকে নগদ প্রবাহ সংকটসহ নানা ধরনের আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুক্ষীন হতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কারখানাগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করছে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, সাপ্লাই চেইন অবিঘ্নিত রাখতে।

চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের সার্বিক কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে ও মসৃণভাবে পরিচালনা করার স্বার্থে পোশাকখাতে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়। বিশেষ করে কারখানাগুলোতে যাতে করে শ্রম অসন্তোষের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি এবং তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে শ্রমিকরা রাস্তা যেন রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষদের জন্য ভোগান্তি বয়ে না আনে সে ব্যাপারে বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে আইবিসি নেতাদের সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

সভায় কারখানার অভ্যন্তরের সমস্যাগুলো ত্রি-পক্ষীয়ভাবে সমাধানের ওপর জোর দেওয়া হয়। বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, কোথাও কোনো সমস্যা হলে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতাও চান তিনি।

কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, দাবি আসতেই পারে, কিন্তু দাবিগুলো অ্যাড্রেস করতে হবে যৌথভাবে।

সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, সভায় সব পক্ষ সুষ্ঠু শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য একসঙ্গে মজুরি বা অন্য যে কোনো ইস্যুতে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে কোনো দূরত্ব বা দ্বন্ধ তৈরি হলে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিনিধি মিলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে। পোশাকখাতে আইনশৃঙ্খলা সব পক্ষ একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে অঙ্গীকার করেন।

একই বিষয়ে আইবিসি বহির্ভূত শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে অন্য একটি মতবিনিময় সভার আয়োজনএকই দিনে আইসিবি নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পরপরই বিজিএমইএ এর নেতারা একই বিষয়ে আইবিসি বহির্ভূত শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে একটি মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, পরিচালক রেজাউল আলম (মিরু), কর্নেল মহিউদ্দিন, লে. কর্নেল মো. আসিফ রহমান, লে. কর্নেল আবুল বাশার তুহীন, ডিআইজি মোহাম্মদ আজাদ মিয়া এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রায় ২৫টি আইবিসি বহির্ভূত শ্রমিক ফেডারেশনের শ্রমিক নেতারা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

এমআইএইচএস/জিকেএস