সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের ভাই এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা ২০০ একর বনভূমি উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগ। ১৬ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই মহিষ পালনের নামে এই বনভূমি দখলে নেওয়া হয়। বড়ভাই ড. হাছান মাহমুদের পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধ সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন এরশাদ মাহমুদ।
Advertisement
২৬ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রাম, পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া রেঞ্জ ও খুরুশিয়া রেঞ্জে টানা অভিযানে এসব বনভূমি উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের পর থেকে বড় ভাই ড. হাছান মাহমুদের প্রভাব খাটিয়ে বন বিভাগের মালিকানাধীন একের পর এক পাহাড় থেকে শুরু করে জলাশয়, সমতল ভূমি সবকিছুই দখল করতে থাকেন এরশাদ মাহমুদ। যেখানে তিনি গড়ে তুলেন পর্যটন কেন্দ্র, বাংলো, বাগান, গয়াল ও গরুর খামারসহ নানা স্থাপনা। বিভিন্ন জলাশয় দখলে নিয়ে করেন মাছ চাষ। উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের খুরুশিয়া রেঞ্জের সুখবিলাস থেকে শুরু করে দুধপুকুরিয়া এবং অন্যদিকে পূর্ব খুরুশিয়া পর্যন্ত বনের ২০০ একর জায়গা দখল করে রাখা হয়েছিল গত ১৬ বছর।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, খুরুশিয়া রেঞ্জের কর্মীরা সম্প্রতি খুরুশিয়া বিট এলাকা থেকে একদিনেই ১০০ একর বনের জায়গা উদ্ধার করে। এই জায়গা মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার করতেন এরশাদ মাহমুদ এবং পাশে বিশাল একটি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। অভিযানকালে বনের ভেতর অবৈধভাবে তৈরি ঘর উচ্ছেদ করা হয় এবং পুকুরের পাড় কেটে পানিগুলো বের করে দেওয়া হয়।
Advertisement
এর আগে বুধবার (২৮ আগস্ট) পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া বিট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় এরশাদের দখলে থাকা প্রায় ৩০ একর বনভূমি। সেখানে মালটা ও কাজু বাদামের বাগান গড়ে তোলা ছাড়াও পাহাড়ি ছড়ার পানি আটকে তৈরি করা হয় বিশাল পুকুর।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সুখবিলাস গ্রামে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ১৫ একর বনভূমি। এর মধ্যে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়কের পাশে দশমাইল এলাকায় ৫ একর জমি দখল করে তিনটি পুকুর, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়।
তার আগে সোমবার (২৬ আগস্ট) দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামে অবৈধভাবে দখল করে রাখা ৫৫ একর বনভূমি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ।
খুরুশিয়া রেঞ্জে এখনও এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা আরও অন্তত ২০ একর জমি উদ্ধারের বাকি আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
এএজেড/এসএনআর/এমএস