জাতীয়

আওয়ামী সরকারের উন্নয়ন প্রচারের নামে লুটপাট

সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন প্রচারণার নামে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রে হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নানান অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। বিগত সময়ে নিগ্রহের শিকার কর্মকর্তারাও এখন অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছেন। জাগো নিউজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নানান অনিয়ম।

Advertisement

মহাব্যবস্থাপকের নিয়োগ থেকে পদায়নে অনিয়ম

বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রে মহাব্যবস্থাপক চলতি দায়িত্বে নূর আনোয়ার হোসেন। ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বিটিভিতে অডিয়েন্স রিসার্চ অফিসার/স্ক্রিপ্ট অ্যান্ড মনিটরিং এডিটর (গ্রেড-২) হিসেবে যোগ দেন। ২০০৯ সালের ৪ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের লিখিত সুপারিশে পরের ৯ জুন নূর আনোয়ার হোসেনকে বিধিবহির্ভূতভাবে স্থায়ী পদ প্রযোজক (গ্রেড-২) পদায়ন করে বিটিভি। পরে রাজনৈতিক প্রভাবে ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রযোজক (গ্রেড-১) পদে পদোন্নতি এবং ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে নির্বাহী প্রযোজক এবং ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কন্ট্রোলার/প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি দেয় বিটিভি।

২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি নূর আনোয়ার হোসেনকে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পদায়ন করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। মূলত ওই সময়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সখ্য কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের দায়িত্ব নেন তিনি।

নিজ অফিসে চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাতের সঙ্গে বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) নূর আনোয়ার হোসেন।

Advertisement

এদিকে বিটিভির ১৪ কর্মকর্তার এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নূর আনোয়ার হোসেনের নিয়োগ, পদোন্নতি থেকে পদায়নে অনিয়ম রয়েছে উল্লেখ করে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দেয় বিটিভির মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে সাময়িকভাবে পদায়নকৃত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার (নূর আনোয়ার হোসেন) নিজস্ব ফিডার লাইনে (অডিয়েন্স রিসার্চ অফিসার/স্ক্রিপ্ট অ্যান্ড মনিটরিং এডিটর (গ্রেড-১) পদে পদোন্নতি না দিয়ে অন্য স্থায়ী ফিডারে প্রযোজক (গ্রেড-২) পদে পদায়ন ও পদোন্নতি প্রদান বিধিসম্মত নয়।

অধীনস্তদের নিগ্রহ, ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে অসদাচরণ

কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের দুই কর্মকর্তার কথোপকথন ভাইরাল হয়। ওই কথোপকথনে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) নূর আনোয়ার হোসেন অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) আকতার হোসেনকে বলেন, ‘আকতার আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে, তুমি আমাকে এভয়েড করে চলতেছ? ঘটনাটি কী?’ শেষে বলেন, ‘লাত্থি দিয়ে বিদায় করে দেবো।’

আরও পড়ুন আশি-নব্বই দশকের প্রজন্ম ছাড়া কেউ বিটিভি দেখে কি না জানি না বিটিভিকে মানসম্মত অনুষ্ঠান পরিবেশনের সুপারিশ পাচার অর্থ পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন দেশে বিএফআইইউয়ের চিঠি

গত ১৪ আগস্ট বিকেলে আকতার হোসেনকে ফোন করে এভাবেই শাসাচ্ছিলেন মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেন। শুধু আকতার হোসেন নন, মহাব্যবস্থাপকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কলাকুশলীরা এ ধরনের দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনের পর বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিভিন্ন সময়ে নিগ্রহের শিকার কর্মকর্তারা মহাব্যবস্থাপকের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করলে এমন আচরণ প্রকাশ করেন মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেন। তবে এ বিষয়ে ফোনের অন্যপ্রান্তে থাকা কর্মকর্তা আকতার হোসেন এই প্রতিবেদককে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

Advertisement

নূর আনোয়ার হোসেনের নিগ্রহের শিকার বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে প্রেষণে পদায়িত অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ) আতাউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম মহোদয় শিল্পী-কলাকুশলী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমাকে হুমকি দেওয়ায় গত বছর মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। এখন আরও ১৪ কর্মকর্তা জিএম নূর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। ওই অভিযোগ তদন্ত করছে মন্ত্রণালয়।

অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারী বাদেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে নূর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। চলতি বছরের মে মাসে এক সভায় অনির্ধারিতভাবে উচ্ছৃখল বক্তব্য দেওয়া ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগে গত ৩০ মে তাকে প্রশাসনিক সতর্কীকরণ দেন বিটিভির মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন প্রচারণার নামে অর্থ লোপাট

বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ১৮ জন স্থায়ী প্রযোজক রয়েছেন। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে নিজস্ব প্রযোজকদের বসিয়ে রেখে রাজনৈতিক প্রভাবপুষ্ট ব্যক্তিদের চুক্তিভিক্তিক অতিথি প্রযোজক নিয়োগ দিয়ে সরকারের নানান উন্নয়ন প্রোগ্রাম তৈরি ও প্রচার শুরু করে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র। এ ধরনের চারটি প্রোগ্রামের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধান বলছে, মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেন কয়েকজন অতিথি ও প্রযোজক নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে নিম্নমানের অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচারের মাধ্যমে সরকারের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অতিথি প্রযোজকদের অন্যতম শাখাওয়াত হোসেন মিঠু। ‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’, ‘দেশ বদলে যাওয়ার গল্প’ ও ‘পরিবর্তনের চিত্র’ নামের এসব অনুষ্ঠান নির্মাণের নামে চলে সরকারি অর্থের হরিলুট।

আরও পড়ুন উন্নয়ন প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে শেষ করার নির্দেশ তথ্য উপদেষ্টার অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয়, সদস্য ১১ জন এস আলমের পিএসের অ্যাকাউন্টে ৯৯ কোটি টাকার হদিস

‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানটি ৯৮ পর্ব প্রচার দেখানো হয়। ২৫ মিনিটের একেক পর্ব নির্মাণে ব্যয় দেখানো হয় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা করে। পুরো অনুষ্ঠানের পেছনে কোটি টাকার ওপরে ব্যয় ধরা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠান ধারণ কাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রযোজক স্পটে না গিয়েই শুধু নেট ফুটেজ দিয়ে দুর্বল মানের ২০-৩০টি অনুষ্ঠান নির্মাণ করে ৯৮ পর্ব প্রচার দেখিয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা হলে ‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ এবং ‘পরিবর্তনের চিত্র’ অনুষ্ঠানের প্রযোজক শাখাওয়াত হোসেন মিঠু জাগো নিউজকে বলেন, ‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানটিতে আমি শেষের দিকে কাজ করেছি। চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপিদের বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে প্রোগ্রামটি করা হয়েছিল। এটি চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকায়ও প্রচার হয়েছে। অনুষ্ঠানটিতে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানটির শেষের কয়েকটি পর্ব নির্মাণের কথা বললেও জাগো নিউজের হাতে আসা দ্বিতীয় পর্বের একটি খরচের বিলে শাখাওয়াত হোসেন মিঠুর স্বাক্ষর রয়েছে। ব্যয়িত একটি বিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৫০ টাকার বিলটির প্রস্তুতকারী শাখাওয়াত হোসেন মিঠু, সহযোগী প্রযোজক হিসেবে স্বাক্ষর করেন মো. মুহসিন সরদার, অনুষ্ঠান অধ্যক্ষ হিসেবে বিলে স্বাক্ষর রয়েছে রোমানা শারমীনের। বিলটি অনুমোদন করেন মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেন। বিলটিতে অংশগ্রহণকারী হিসেবে ২৮ জন শিল্পীর নাম রয়েছে। ২৬ জনকে প্রতি মিনিট ১৪২ টাকা হিসেবে ২৫ মিনিটের জন্য ৪ হাজার ২০০ টাকা করে বিল পরিশোধ দেখানো হয়। অথচ মিনিটপ্রতি ১৪২ টাকা হিসেবে ২৫ মিনিটের বিল আসে ৩ হাজার ৫৫০ টাকা। জনপ্রতি ৬৫০ টাকা বিল বেশি দেখানো হয়েছে। ২৬ জনের মধ্যে ছয়জনকে আলোচনা এবং ২০ জনকে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হিসেবে দেখানো হয়। বাকি দুজনের মধ্যে একজনকে নেপথ্য বর্ণনাকারী উল্লেখ করে প্রতি মিনিটে ১১০ টাকা হিসেবে ২৫ মিনিটের জন্য ২ হাজার ৭৫০ টাকা এবং একজনকে অতি জটিল অনুষ্ঠান সহযোগী হিসেবে এক হাজার ৮০০ টাকা পরিশোধ দেখানো হয়। বিলে নাম দেখানো আলোচনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হিসেবে বেশিরভাগ নামই ভুয়া বলে দাবি করেছেন বিটিভির নিজস্ব প্রযোজকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রযোজক জাগো নিউজকে বলেন, ‘২৬ জনের মধ্যে ২০ জনকে কেউ কখনো দেখেননি। জিএম এবং অতিথি প্রযোজকরা তাদের নিকটাত্মীয়দের নাম ব্যবহার করে এসব বিল তুলে আত্মসাৎ করছেন।’

তাছাড়া ‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের জন্য নেওয়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফুটেজ থেকে ‘দেশ বদলে যাওয়ার গল্প’ অনুষ্ঠানটি দেখানো হয়। প্রতি পর্বের জন্য ৫৫-৬০ হাজার টাকা খরচ করা হয়। ২০ পর্বের অনুষ্ঠানটির জন্য প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করা হয় বলে জানা গেছে। একইভাবে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের বর্ষপূর্তিতে একদিনের একটি অনুষ্ঠানের জন্য ২৫ লাখ টাকা বাজেট দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে মহাব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে।

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) নূর আনোয়ার হোসেন।

এ বিষয়ে কথা হলে বিটিভির মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, নূর আনোয়ার হোসেন অডিয়েন্স রিলেটেড একটি পদে অডিয়েন্স রিসার্চ অফিসার গ্রেড-টু হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন পিএসসির মাধ্যমে। পরে ট্র্যাক পরিবর্তন করে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। মূলত বিটিভির প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের পদায়ন হয় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক পদায়ন হয় মন্ত্রণালয় থেকেই। বিটিভির পদায়ন ও পদোন্নতি নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি রয়েছে। কমিটিতে সিনিয়র সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিটিভির মহাপরিচালক রয়েছেন। নূর আনোয়ার হোসেনের পদায়ন নিয়ে কথা উঠলে মন্ত্রণালয় থেকে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়। আমি তার নিয়োগ পদোন্নতিতে অনিয়মের বিষয়টি পত্রের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তাছাড়া বিটিভির ১৪ কর্মকর্তা নূর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে। সেটিতে মন্ত্রণালয় তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ খতিয়ে দেখা হবে স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ ৬ অভিযোগে সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন বাসা থেকে ৩ কোটি টাকা পাওয়া সেই সাবেক সচিব কারাগারে

চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচারে দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘এ ধরনের লিখিত কোনো অভিযোগ আমার পর্যায়ে আসেনি। অনুষ্ঠান নির্মাণে কোনো অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) নূর আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়মনীতি মেনেই আমার নিয়োগ হয়েছে। পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিলেকশন কমিটি রয়েছে। কমিটির পর্যালোচনা এবং সিদ্ধান্তেই আমার পদোন্নতি এবং পদায়ন হয়েছে।’

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) নূর আনোয়ার হোসেন।

‘বিটিভিতে যারা কাজ করেন না, এমন কয়েকজন ব্যক্তি যাদের বিরুদ্ধে আমি ইতোমধ্যে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানিয়েছি, তারাই একটি চিঠি বিভিন্ন দিকে চালাচালি করছেন। অধীনস্তদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার কিংবা ঊর্ধ্বতনদের সাথে বিরূপ আচরণের বিষয়টি সঠিক নয়’ বলে দাবি করেন নূর আনোয়ার হোসেন।

নূর আনোয়ার হোসেন দাবি করেন, ‘চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে আমি কখনো কাউকে কোনো অনুষ্ঠান নির্মাণের জন্য সরাসরি কাজে নিইনি। এ ধরনের কোনো কাগজে আমার সাইন দেখবেন না। আমাদের প্রত্যেকটি বিভাগে বিভাগীয় প্রধান আছেন। বিভাগীয় প্রধানদের সুপারিশসহ আমি বিষয়গুলো কাটছাঁট কিংবা সমন্বয় করি। সব সময় আমি আমার সহকর্মীদের প্রাধান্য দিই। আমি আগেও ঢাকায় একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে ১৬ বছর কাজ করেছি। যোগ্যতা ও দক্ষতার মাপকাঠিতে সবাইকে সমানভাবে দেখার চেষ্টা করি। অনুষ্ঠান নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি সঠিক নয়।’

এমডিআইএইচ/এমএমএআর/এএসএম