জুমার নামাজ ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) স্বাধীন (যিনি ক্রিতদাস নন) নগর বা লোকালয়ের অধিবাসী পুরুষদের ওপর জুমার দিন জোহরের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব যদি তার এমন কোনো গ্রহণযোগ্য অসুবিধা, অসুস্থতা বা বার্ধক্য না থাকে যে কারণে তিনি মসজিদে উপস্থিত হতে ও জুমা আদায় করতে অক্ষম। রাসুল সা. বলেছেন,
Advertisement
الْجُمُعَةُ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فِي جَمَاعَةٍ إِلاَّ أَرْبَعَةً عَبْدٌ مَمْلُوكٌ أَوِ امْرَأَةٌ أَوْ صَبِيٌّ أَوْ مَرِيضٌ
জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাআতের সাথে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের উপর ওয়াজিব নয়; ক্রীতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি। (সুনান আবু দাউদ: ১০৬৭)
ইমাম ছাড়া তিনজন মুসল্লি জুমার জামাতের জন্য উপস্থিত থাকলেই জুমার নামাজ আদায় করা যায়। বন্যাকবলিত এলাকায় মসজিদে বা মসজিদের বাইরে যে কোনো শুকনো জায়গায় তিনজন বা এর বেশি মুসল্লি যদি সমবেত হতে পারে, তাহলে তাদের ওপর জুমা আদায় করা ওয়াজিব।
Advertisement
বন্যার কারণে কোনো এলাকায় যদি তিনজন মুসল্লিও সমবেত না হতে পারে, তাহলে জুমা ওয়াজিব থাকবে না; প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে জোহর আদায় করে নেবে। কেউ বন্যার কারণে বাড়িতে আটকা পড়লে, মসজিদে বা জুমার জামাতে উপস্থিত হওয়া সম্ভব না হলেও তার ওপর জুমা ওয়াজিব থাকবে না।
জুমা, জোহরসহ অন্যান্য ফরজ-ওয়াজিব নামাজের ক্ষেত্রে বন্যার্ত ব্যক্তি পানিতে আটকা পড়লে তার কাছে যদি নৌকা থাকে, তাহলে সে নৌকায় নামাজ পড়ে নেবে। নৌকা না থাকলে শুকনো জায়গায় যাওয়ার অপেক্ষা করবে।
যদি শুকনো জায়গায় যাওয়া সম্ভব না হয় এবং ওয়াক্ত শেষ হয়ে যেতে থাকে এবং পানিতে দাঁড়ানো সম্ভব হয়, তাহলে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে পানিতেই নামাজ আদায় করে নেবে। পানি যদি অল্প হয় এবং রুকু করা সম্ভব হয়, তাহলে রুকু আদায় করবে এবং সিজদা ইশারায় আদায় করবে। পানি বেশি হলে রুকু ও সিজদা উভয়টিই ইশারায় আদায় করবে।
তবে যদি পানিতে দাঁড়ানোও সম্ভব না হয় সাঁতার দিয়ে ভেসে থাকতে হয়, তাহলে ওই অবস্থায় নামাজ আদায় করবে না। বরং পরবর্তীতে কাজা আদায় করে নেবে।
Advertisement
ওএফএফ/জিকেএস