স্ত্রীর করা যৌতুক ও নির্যাতনের মামলায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের স্ত্রী জয়া সাহা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ও ৩০ ধারায় মামলাটি করেন। মামলার ফলে সঞ্জয় কুমার সরকারকে আটক করে পুলিশ।
Advertisement
পরে পারিবারিকভাবে বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য আদালতের কাছে অস্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তিনি। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ড. সঞ্জয় কুমার বিষয়টি পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হন। নির্ধারিত সময় পার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হলে তাকে আটক করা হয়। ফলে আদালত তার স্থায়ী জামিন নামঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলায় সঞ্জয়ের বাবা সুসান্ত সরকার, মা ঊষা রানী সরকার ও ভাই দুর্জয় কুমার সরকারকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, আট বছর আগে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। এসময় বাদীর পরিবারের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ লাখ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় ফার্নিচার দেওয়া হয়। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্যের কারণে জয়া সাহা বিভিন্ন সময় তার স্বামী সঞ্জয় সরকার হাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। একই সঙ্গে জয়াকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত বছরের জুনে আবারও ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন সঞ্জয় কুমার। পরে জয়া টাকা আনতে অপারগতা জানালে তাকে ও তার সাড়ে চার বছরের শিশু সন্তানকে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়ি রেখে আসেন। তারপর থেকে উভয়েই এক বছরের বেশি সময় আলাদা থাকছেন।
Advertisement
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আলেক শেখ বলেন, সঞ্জয় কুমার সরকারকে আটকের পর পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি অস্থায়ী জামিন নেন। কিন্তু পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান না করতে পারায় তার স্থায়ী জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
সঞ্জয় কুমারের আইনজীবী শাহজাহান কবীর বলেন, আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আশা করি তিনি জামিন পাবেন। আমরা আগামী রোববার আবারো চেষ্টা করবো জামিনের জন্য।
এ বিষয়ে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের স্ত্রী জয়া সাহা বলেন, এ নিয়ে আমার নতুন করে কিছু বলার নাই। আমার ও আমার সন্তানের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক নির্যাতনের ফলেই তার এই পরিণতি হয়েছে। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।
মুনজুরুল ইসলাম/জেডএইচ/এমএস