গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) আরও পরের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাজ্য এবং সুইজারল্যান্ডের অনুরোধে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
Advertisement
সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একটি গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ‘জাতিসংঘের মানবিক কনভয়’ স্পষ্টভাবে লেখা থাকার পরেও ইসরায়েলি বাহিনী ওই গাড়ি বহরে গুলি চালানোর পরই নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকা হলো।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত জাতিসংঘের মিশন সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছে, জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে গাজায় সহায়তা কার্যক্রম এবং কর্মীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। একই সঙ্গে সেখানে পোলিওর প্রাদুর্ভাব বন্ধ করার জন্য ভ্যাকসিন কার্যক্রম জরুরিভাবে প্রয়োজন বলেও জানানো হয়।
গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৫৩ শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এই সময়ে দৈনিক গড়ে ৭২ জন ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ প্রাণ হারিয়েছেন দখলদারদের হামলায়। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১০ হাজার গাজাবাসী। ধারণা করা যায়, তাদের কেউই আর বেঁচে নেই।
Advertisement
এদিকে ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, নুসেইরাত শরণার্থী শিবির এবং দেইর আল বালায় বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে দুই শিশু এবং এক নারী নিহত হয়েছে।
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলার পর দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং দেইর আল বালা থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গাজায় হামলা অব্যাহত রাখার মধ্যেই ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি নেতা ও জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির বলেছেন, তিনি সুযোগ পেলে জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে একটি ইহুদি উপাসনালয় তৈরি করবেন। তার এই বক্তব্য কেন্দ্র করে সৌদি আরব, কাতার, জর্ডানসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে ইসরায়েলি সরকারের নীতিমালা নিয়েও।
সোমবার (২৬ আগস্ট) আর্মি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেন গভির বলেন, সম্ভব হলে আমি পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে একটি সিনাগগ অর্থাৎ ইহুদি উপাসনালয় তৈরি করবো। আমার চাওয়া অনুযায়ী যদি আমি কিছু করতে পারতাম, তাহলে আমি ওই জায়গায় একটি ইসরায়েলি পতাকাও লাগাতাম। আল-আকসাকে ইহুদিরা তাদের ‘টেম্পল মাউন্ট’ বা ‘সবচেয়ে পবিত্র স্থান’ হিসেবে দাবি করে।
Advertisement
২০২২ সালে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তত ছয়বার ওই বিরোধপূর্ণ জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন বেন গভির। এ নিয়ে তিনি তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি মনে করেন, মসজিদটিতে ইহুদিদের প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়া উচিত।
টিটিএন