দেশে হঠাৎ বন্যায় বড় ধরনের খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বন্যাপরবর্তী কৃষি পুনর্বাসন ও খাদ্য সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার জন্য বিনামূল্যে শাকসবজির বীজ ও ধানের চারা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এই কাজে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন।
Advertisement
মঙ্গলবার ভোর থেকেই শেকৃবির গবেষণা মাঠে ধানের চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার বীজ বপন করেন তারা। এসব কাজে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ।
বীজতলায় আমন ধানের বিভিন্ন জাতের চারা যেমন- ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ২৩, বিনা ধান ১৭ বপন করা হবে। এছাড়া সবজি ফসলের জন্য বিভিন্ন জাতের টমেটো, লাউ, শিম, বরবটিসহ শীতকালীন সবজির বীজ ও চারা বিতরণ করা হবে। এ সমস্ত বীজের বীজতলা পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে শেকৃবির কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. জামিলুর রহমান বলেন, খাদ্য সংকট মোকাবিলায় কৃষকদের বিনামূল্যে ধানের চারা দিতে আমরা বিএডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রায় দেড় একর জায়গার জন্য বীজ সংগ্রহ করেছি। এর পাশাপাশি লাউ, শিম, বেগুন, পেপে, বরবটিসহ টমেটোর বীজ ও চারা কৃষকদের দেওয়া হবে। এই চারা তৈরি হওয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভাবিত ‘সাউ ক্যানোলা-১’ সাদা ভূট্টা, কিনোয়ার বীজ তৈরি করে কৃষকদের দেওয়া হবে।
Advertisement
আরও পড়ুন
বন্যায় ভেসে গেছে ফেনীর মাছ-মুরগির খামার লক্ষ্মীপুরে ভেসে গেছে ৪০ হাজার পুকুরের মাছ বন্যায় তলিয়ে গেছে ২ লাখ ৩০ হাজার হেক্টরের ফসলকৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের মহৎ উদ্যোগ খাদ্য সংকট মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি বাস্তবায়নে শিক্ষকরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা বন্যাকবলিত এলাকায় ধান রোপণের বিষয়ে পরামর্শ করতে এলে আমরা বিআরআরআই ও বিএডিসিতে ধান বীজের জন্য যোগাযোগ করি এবং বিএডিসি থেকে ৩০০ কেজির মতো ধান বীজ পাই। প্রায় চার বিঘা জমিতে বীজগুলো বপনের প্রক্রিয়া চলমান। আমরা বিএডিসি থেকে আরও ধান বীজ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ রাখছি।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে বন্যার্তদের সহযোগিতা করার জন্য বীজতলা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের বীজতলা তৈরির কাজ শেষ। আগামীকাল সকালে আমরা ধানের বীজ বপন করবো এবং এই চারা পরবর্তীতে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
শাকসবজির চারার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসের এই ছোট্ট জায়গায় খুব বেশি চারা উৎপাদন সম্ভব নয়। তাই আমরা বাণিজ্যমেলার মাঠে শাকসবজির চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Advertisement
তাসনিম আহমেদ তানিম/বিএ/এএসএম