আইন-আদালত

সাবেক ৩ প্রধান বিচারপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা

সাবেক তিন প্রধান বিচারপতিসহ সাত বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

Advertisement

বুধবার (২৮ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি।

সাবেক তিন প্রধান বিচারপতি হলেন- সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

আরও পড়ুন

Advertisement

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ আবেদন

এছাড়াও মামলায় উল্লেখ করা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অন্য সাবেক চার বিচারপতি হলেন- বিচারপতি সৈয়দ ঈমান আলী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আদালত অবমাননার অভিযোগে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিলেন। তাই তিনি এই আবেদন করেছেন।

ইউনুছ আলী আকন্দের অভিযোগ, এসব বিচারপতি ক্ষমতার অপব্যহার করে আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে অসাংবিধানিকভাবে আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬ লঙ্ঘন করে কোনো শুনানির সুযোগ না দিয়ে আদালত অবমাননার নামে তাকে শাস্তি দেন।

তিনি জানান, প্রথমে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শুনানির সুযোগ না দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্র্যাকটিস (আইন পেশা পরিচালনা থেকে বিরত রাখা) সাসপেন্ডসহ আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়। দ্বিতীয় শান্তি দেওয়া হয় একই বছরের ১২ অক্টোবর। ওইদিন প্র্যাকটিস সাসপেন্ডসহ জরিমানা করা হয়।

Advertisement

এ আইনজীবীর মতে, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টসহ সব কোর্টে আদালত অবমাননা হলে আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬ এর ৩ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাইকোর্ট শাস্তি দিতে পারেন, কিন্তু আপিল দ্বারা নয়।

বার কাউন্সিল আইনের ৩২ ধারায় ট্রাইব্যুনাল আইনজীবীর পেশাগত অসদাচরণ প্রমাণিত হলে পেশা সাসপেন্ড করতে পারে কিন্তু আপিল দ্বারা নয়। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক নয়।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি মামলা করা যায়। কিন্তু সংবিধান ১০২ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় এবং ১০৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। সংবিধান ১০৪ ও ১০৮ অনুচ্ছেদে আপিল বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় না।

হাইকোর্টের আদালত অবমাননা রায়ের বিরুদ্ধে অনুচ্ছেদ ১০৩ (২) (গ) অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। সংবিধান ১০৪ অনুচ্ছেদে বিচারাধীন আপিলে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য যেরূপ প্রয়োজন সেরূপ আদেশ দিতে পারবে, কিন্তু সরাসরি কোনো মামলায় নয়।

তিনি জানান, সরাসরি আপিল বিভাগে আপিল হয়। এ বিচারপতিরা ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে শপথভঙ্গ করে শুনানির সুযোগ না দিয়ে অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়ে প্র্যাকটিস থেকে বিরত রাখেন, যা সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে মানবাধিকার লঙ্ঘন।

আপিল বিভাগে ওই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার খর্ব করে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী সবাই সমান এবং ৩১ অনুচ্ছেদে আইন ছাড়া কিছু করা যাবে না বলে উল্লেখ আছে।

এফএইচ/ইএ/এমএস