ভারতের ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বন্যা ও ভাঙন আতঙ্ক। তবে এখন পর্যন্ত রাজবাড়ীর সবগুলো গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার নিচে থাকায় স্বস্তিতে রয়েছে জেলাবাসী।
Advertisement
এদিকে গত সোমবার ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিলেও প্রতিদিনই কমছে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর অংশের পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে ১২ এবং সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার কমেছে পদ্মার পানি। তবে এখন পর্যন্ত পাংশা সেনগ্রাম পয়েন্টের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজবাড়ীর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পদ্মা বিধৌত জেলা রাজবাড়ী। এ জেলার ৫ উপজেলার মধ্যে বালিয়াকান্দি ব্যতীত ৪ উপজেলা রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ, কালুখালী ও পাংশা উপজেলা পদ্মা নদীর তীরবর্তী। প্রতিবছর বর্ষায় বাঁধের বাইরে থাকা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও নদীর কোল ঘেঁষে শহররক্ষা বাঁধ থাকায় বন্যার হাত থেকে রক্ষা পায় জেলাবাসী। তবে এবার ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার খবরে জনমনে দেখা দিয়েছে বন্যা আতঙ্ক।
Advertisement
এদিকে বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। নগদ টাকা, শুকনো খাবার ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮.২০ মিটারের স্থানে ৬.৭৮ মিটার এবং রাজবাড়ী সদরের মহেন্দ্রপুরে ১০.৫০ মিটারের পদ্মার পানি রয়েছে স্থানে ৮.০১ মিটার।
পদ্মা তীরবর্তী বাসিন্দা তৌহিদ উদ্দিন সরদার, নায়েব আলী ও খবির কাজী বলেন, শুনেছি ফারাক্কা বাঁধ ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাজবাড়ীতে পানি আসেনি। এই পানি আসতে কয়েকদিন সময় লাগবে। এখন তারা ভয়ে আছেন, কখন পানি চলে আসে। এমনিতেই নদী ভাঙনে তাদের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। এ অবস্থায় যদি বন্যা হয়, তাহলে পরিবার-পরিজন ও গবাদি পশু নিয়ে কোথায় যাবেন, কী করবেন বুঝতে পারছেন না। আর এই পানি আসলেতো একবারে আসবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এম.এ শামীম বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ ফারাক্কা বাঁধের গেট বর্ষা মৌসুমে কম বেশি খোলা থাকে। বন্যা পূর্ভাবাস সতর্ককরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী আগামী ৫ দিন রাজবাড়ীতে বন্যা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তারপরও বেড়ি বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন। কোনো ধরনের সমস্যা মনে হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
Advertisement
রুবেলুর রহমান/এফএ/এএসএম