চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাক্ষসী হয়ে উঠছে নদীটি। সারাবছর পদ্মায় ভাঙন আতঙ্ক থাকলেও সম্প্রতি ভাঙন তীব্র হয়েছে। এতে রাতেও ঘুম নেই নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের। ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমি, সরকারি স্থাপনা ও ঘরবাড়ি।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের ভয়ে সারারাত ধরে ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন নদীর তীরের বাসিন্দারা। এমনকি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতাও চাইছেন ভাঙনকবলিত মানুষ।
পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহিন আলী বলেন, এশা নামাজের পর থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে। তখন থেকেই আমরা বাড়ির জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছি। প্রতিবছর আমরা এসময়ে এসে এ সমস্যায় পড়ি। আমাদের দিকে দেখার কেউ নেই। আমাদের অন্য কোথাও জমি নেই। এখন আমরা কোথায় যাবো। কী খাবো?
আব্দুল বশির নামে আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমার গতরাতে বাড়ি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। আমার এখন শুয়ে রাত কাটানোর স্থান নেই। তাই আমরা আসবাবপত্র বাঁচাতে রাতভর কাজ করছি। এখন পর্যন্ত আমাদের গ্রামে অন্তত ১০টি বাড়ি নদীতে বিলিন হয়েছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এই ভাঙন থামানো হোক।
Advertisement
উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি গ্রামের বাসিন্দা আনারুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামের কয়েকটি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। আর ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে আরও কয়েকটি বাড়ি। গতরাত থেকে হঠাৎ এসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাই মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসী এসব বাড়ির মালামাল উদ্ধার করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. ময়েজ উদ্দিন বলেন, পদ্মার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ অংশে বেড়েছে ৭ সেন্টিমিটার। ফারাক্কা ব্যারেজের পর ভারত থেকে পদ্মা নদী চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সেই পাংখা পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। বর্তমানে পানির স্তর ২০ দশমিক ৫৫ মিটার। এখনো পানির স্তর বিপৎসীমার দেড় মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সোহান মাহমুদ/এমএইচআর
Advertisement