দেশজুড়ে

মিরসরাইয়ে নিম্নাঞ্চলের পানি এখনো নামেনি, বাড়ছে দুর্ভোগ

টানা সাতদিন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের পানি এখনো পুরোপুরি নামেনি। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার অন্তত দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলো। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য কাঁচা ও মাটির ঘর। গত দুদিন ধরে অধিকাংশ ঘর থেকে পানি নামলেও উঠানে ও গ্রামীণ সড়কে পানি থাকায় স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরতে পারছে না মানুষ।

Advertisement

২১ আগস্ট থেকে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রায় ১৬৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। প্রথমদিকে উপজেলার ১৮২টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নেয়। এরপর সোমবার থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করে লোকজন। তবে এখনো প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এবং আরও প্রায় ২০ হাজার মানুষ আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে আশ্রয়ে রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, এখানে নারী-বৃদ্ধ ও শিশু মিলে ৭০ জন রয়েছেন। তবে গত কয়েকদিন আগে এখানে প্রায় ১ হাজার লোক আশ্রয় নেয়।

ওইদিন উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার ও অলিনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি-ঘর থেকে বানের পানি নেমে গেছে। মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য লড়াই করছেন। তবে পশ্চিম জোয়ার গ্রামের অধিকাংশ কাঁচা ও মাটির ঘর মাটিতে মিশে গেছে। ভেসে গেছে শত শত গবাদিপশু।

Advertisement

গ্রামের বাসিন্দা জহির উদ্দিন জানান, বন্যার শুরুতেই তলিয়ে যায় করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রাম। এ গ্রাম ফেনী নদীর পাশে হওয়ায় পানি তীব্রতাও ছিল বেশি। দরিদ্র পরিবারগুলোর সহায় সম্বল বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

মঙ্গলবার পর্যন্ত ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, ধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৩ ফুট পানি রয়েছে। এসব ইউনিয়নে গ্রামীণ সড়ক, পুকুর, পোল্ট্রি খামার, কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত।

মিরসরাই উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে উপজেলার ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, ধুম ইউনিয়নের কিছু গ্রামে বন্যার পানি রয়েছে। তবে বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে গেছে। গ্রামীণ কিছু সড়কে এখনো পানি।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসক মাহফুজা জেরিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি আগামী দু-একদিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। এখন আমরা জনস্বাস্থ্য এবং পুনর্বাসন নিয়ে পরিকল্পনা করছি। বন্যাকবলিত মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে কাজ করছি।

Advertisement

এম মাঈন উদ্দিন/জেডেএইচ/এমএস