আইন-আদালত

আ. লীগে অনেক ভালো নেতা-কর্মী আছে, ১৫ বছরে যারা হালুয়া রুটি চায়নি

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, আওয়ামী লীগে অনেক ভালো ভালো নেতা-কর্মী আছে যারা তাদের আদর্শে বিশ্বাস করে। তারা গত ১৫ বছরে হালুয়া রুটি পায়নি বা চায়নি।

Advertisement

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে দায়ের করা রিটের শুনানির পর মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি কোর্ট বলেছি যে আওয়ামী লীগের অবশ্যই অনেক ভালো নেতা-কর্মী আছে। লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী যাদের। তাদের অনেকেই বিগত ১৫ বছরে কোনো হালুয়া রুটি পায়নি বা চায়নি। এরকম অনেককে আমি চিনি।

এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের শীর্ষ এই আইনজীবী রিটটি সরাসরি খারিজ চেয়ে শুনানি করেন। সেইসঙ্গে এমন রিট করার জন্য আইনজীবীকে জরিমানা করারও দাবি জানান। পরে এ বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ১ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত।

Advertisement

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত হবে আওয়ামী লীগ! জামায়াতে যোগ দিতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের অনুমতি লাগবে

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজিব। অন্যদিকে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া নিজে।

অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের জানান, আমি বলেছি, রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি করতে পারতো বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলো। তারা যে পরিমাণ সাফার করেছে। এখন পর্যন্ত বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে করেনি। তারা চায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হোক। রাজনীতির মাঠে জনগণ যাকে গ্রহণ করে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলেছি, শুধু আওয়ামী লীগই না কোনো রাজনৈতিক দলকেই নিষিদ্ধ করতে ইচ্ছুক না অন্তর্বর্তী সরকার।

কোনো দলের নেতা-কর্মী যদি হত্যাকাণ্ড বা এক্সট্রিম পর্যায়ের কর্মকাণ্ডে জড়িত হয় তাহলে এই দলের পরিণতি কী হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ওই দল সিদ্ধান্ত নেবে তাকে বহিষ্কার করবে কি করবে না। আর এদের যে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেন, খুন খারাবি বলেন, মানি লন্ডারিং অপরাধ বলেন, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে আইন আছে সে আইন অনুযায়ী তাদের বিচার হবে।

Advertisement

আদালতে আপনি আওয়ামী লীগের অনেক ভালো নেতা-কর্মী রয়েছে বলে কী বোঝাতে চেয়েছেন, জানতে চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ সময় জোর দিয়ে বলেন, অবশ্যই আছে। লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী যাদের, তাদের অনেকেই বিগত ১৫ বছরে কোনো হালুয়া রুটি পায়নি বা চায়নি। আমি কোর্টে বলেছি যে- আওয়ামী লীগের অনেক ভালো ভালো নেতা আছে, এরকম অনেককে আমি চিনি।

ব্যক্তির দায়ে সংগঠনের বিচার করতে পারেন না। আর রিটকারী আইনজীবীও রিটটি করতে পারেন না। তবে কোনো দল যদি চায় তাহলে সেভাবে করতে পরে বলেও মতামত দেন তিনি।

এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল রিটটি খারিজ চেয়ে হাইকোর্টকে বলেন, এই রিটটি যাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে সেই আওয়ামী লীগকে রিটে পক্ষভুক্ত করা হয়নি এবং কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি। এই রিট মেইনটেনেবল নয়।

এক পর্যায়ে রিটকারী আইনজীবী শুনানির জন্য আরও সময় চাইলে হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আগামী ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

এই রিটেই অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বনিম্ন তিন বছর চেয়ে করা অংশটি আগের শুনানির দিন ‘নট প্রেস’ (উত্থাপিত নয়) করেন রিটকারী। ওইদিন শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আদালতকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান অনুযায়ী আছেন। তারা কতদিন থাকবেন সেটা আদালতের আদেশের জন্য নিয়ে আসার বিষয় না। রিটের এই বিষয়টি মেইনটেনেবল না।

মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া এই রিটটি করেন।

এফএইচ/এসএইচএস/এএসএম