ধর্ম

জাকাতের অর্থ কি বন্যায় ত্রাণ হিসেবে দেওয়া যাবে?

জাকাত ইসলামের ফরজ বিধান, ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক ও সম্পদশালী মুসলমান পুরুষ ও নারীর প্রতি বছর নিজের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্র-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে জাকাত বলা হয়।

Advertisement

ইসলামে জাকাত দেওয়ার কিছু নির্দিষ্ট খাত আছে। যে কোনো নেক কাজে খরচ করলে জাকাত আদায় হয় না। কোরআনে আল্লাহ তাআলা জাকাতের অর্থ ব্যয়ের খাতসমূহ উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

নিশ্চয় সদাকা হচ্ছে দরিদ্র ও অভাবীদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; তা বণ্টন করা যায় দাস আজাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তওবা: ৬০)

Advertisement

এ আয়াতে প্রথমেই জাকাতের হকদার হিসেবে দরিদ্রদের কথা বলা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি যদি দরিদ্র হয় অর্থাৎ সে যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের (৮৭.৪৫ গ্রাম স্বর্ণ অথবা ৬১২.৩৫ গ্রাম রৌপ্য অথবা এর সমমূল্যের সম্পদ) মালিক না হয়, তাহলে তাকে ত্রাণ হিসেবে জাকাত দেওয়া যাবে। আগে সম্পদ ছিল কিন্তু বন্যায় ধ্বংস হয়ে গেছে—এমন ব্যক্তিকেও জাকাত দেওয়া যাবে।

বন্যার্ত কোনো ব্যক্তির অবস্থা যদি এমন হয় যে, সে মূলত সম্পদশালী, কিন্তু বন্যায় আটকা পড়ে যাওয়ায় এই দুর্যোগের সময় সে অসহায় হয়ে পড়েছে, তাহলে তাকেও জাকাত দেওয়া যাবে।

উল্লেখ্য যে, জাকাত শুধু মুসলমানদের দেওয়া যায়। তাই জাকাতের অর্থ শুধু বন্যার্ত দরিদ্র মুসলমানদের দিতে হবে। বন্যার্ত অমুসলিমদের সাধারণ সদকা বা দান থেকে সাহায্য করতে হবে।

মুসলমানদের সদকাসমূহের মধ্যে শুধু জাকাত অমুসলিমদের দেওয়া যায় না। এ ছাড়া সদকায়ে ফিতরসহ বাকি সব সদকা ও দান মুসলিমদের পাশপাশি অমুসলিম দরিদ্রদেরও দেওয়া যায়।

Advertisement

ওএফএফ/এএসএম