দেশজুড়ে

চাঁদপুরে বন্যায় পানিবন্দি অর্ধলক্ষাধিক মানুষ

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় উজানের পানি নেমে গত দুই দিনে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার।

Advertisement

সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলার সূচিপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাড়িঘর পানির নিচে এবং রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। একইসঙ্গে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের এবং গবাদি পশুর ঘর।

সূচিপাড়া ডিগ্রি কলেজে আশ্রয় নিয়েছে আড়াই শতাধিক মানুষ। তারা গত তিনদিন এই আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবার-পরিজন নিয়ে আছেন। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন গবাদি পশুসহ হাঁস-মুরগি।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা জাকির হোসেন বেপারী বলেন, বাড়ি ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় বৃদ্ধা মাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। কবে পানি কমবে সেই চিন্তায় আছি।

Advertisement

তানিয়া আক্তার নামে গৃহবধূ বলেন, শিশুদেরকে নিয়ে গত দুই দিন এই আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। আমাদের বাড়িঘর সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কী অবস্থায় আছে তাও জানি না।

পার্শ্ববর্তী পাথৈর গ্রামের মাহিন হোসেন বলেন, গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণপাড়ার সব বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। আমাদের দেখার জন্য এখন পর্যন্ত কেউ আসেনি। আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।

একই গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, আজ চারদিন আমাদের এলাকায় পানি। কুমিল্লা ও ফেনীর পানি আমাদের এলাকায় চাপ দেওয়ায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ডাকাতিয়া নদী দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কমছে না।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সজাগ ফাউন্ডেশনের সদস্য ফয়েজ আহমেদ বলেন, গত কয়েকদিন যারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তাদেরকে খুঁজে খুঁজে খাবার সামগ্রী দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে দুর্গত মানুষের পাশে সবারই এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

Advertisement

শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, উপজেলার দক্ষিণে ১০টি ইউনিয়নে পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখনো পানিবন্দি পরিবার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে আরও পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা এসব লোকদের সহযোগিতায় কাজ করছি। অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে দুপুরে উপজেলার সূচিপাড়া ডিগ্রি কলেজ আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

শরীফুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম