দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২৪ জন। সোমবার (২৬ আগস্ট) সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান এ তথ্য জানান।
Advertisement
ত্রাণ সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টিই আছে। ১১ জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন। পানিবন্দি পরিবার ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি।
৭৪ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা ৫৫০টি।
এখন পর্যন্ত বন্যায় মোট ২৩ জন মারা গেছে জানিয়ে দুর্যোগ সচিব বলেন, এর মধ্যে কুমিল্লায় ৬ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে ৫ জন, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে ৫ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন।
Advertisement
মৌলভীবাজারে দুজন নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন সচিব।
কামরুল হাসান আরও জানান, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
গত দুদিনের নতুন করে আর কোনো ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আগের বরাদ্দ করা ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কামরুল হাসান আরও জানান, ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৬৪৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
Advertisement
কুমিল্লা জিওসির তথ্য মোতাবেক জানা যায় যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার সব উপজেলায় সড়ক পথে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। সোমবার (২৬ আগস্ট ২৪) ২০ হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে ৮ হাজার প্যাকেট হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এছাড়া সেনাবাহিনীর ৪টি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধসহ কুমিল্লা জেলার ৪ উপজেলায় নিয়োজিত করা হয়েছে।
ফেনীতে স্বাস্থ্য সেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বলেন, সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা নির্দেশনা দিয়েছেন।
সচিব বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কামরুল হাসান বলেন, যারা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফ্টের মাধ্যমে) দিতে চান তারা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছেও তা দিতে পারেন। সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সহায়তা নেওয়া হবে।
যারা ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফ্ট এর মাধ্যমে) দিতে ইচ্ছুক তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল (মোবাইল ০১৭১৮-০৬৬৭২৫) এবং সিনিয়র সহকারী সচিব শরিফুল ইসলামের (মোবাইল-০১৮১৯২৮১২০৮) সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব।
আরএমএম/এমআইএইচএস/জেআইএম