ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তারের পদত্যাগ দাবি করে টানা পঞ্চমদিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
ডা. সাহেনাকে ‘গণহত্যাকারীদের দোসর’, ‘রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী’ এবং ‘স্বৈরাচার’ আখ্যা দিয়ে রোববার (২৫ আগস্ট) অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় দাবি আদায় না হলে ক্লাস বর্জন ও লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
আব্দুল্লাহ আল-মামুন নামের আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে পুরো জাতি যখন রাজপথে, তখন উনি খুনিদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য চমেকে শান্তি সমাবেশ করেন। এছাড়া ১৬ তারিখে চট্টগ্রাম মেডিকেলে আন্দোলনে যুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা করে তাদের শাস্তি প্রদানের হুমকি এবং বিসিএস না হতে দেওয়ার হুমকি দেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসকে পুলিশের হাতে ন্যস্ত করেন।’
আরেক শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান জায়েদ বলেন, ‘চমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আজ পঞ্চমদিনের মতো আন্দোলন চলমান। পঞ্চমদিনের মতো আজও সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আমাদের এ আন্দোলনে বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সমর্থন দিয়েছেন ও একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এরপরও অধ্যক্ষ পদত্যাগ এড়াতে তিনদিনের ছুটি নিয়েছেন এবং এখনো দাপ্তরিক কাজে অনুপস্থিত আছেন। তবে যতক্ষণ আমাদের এক দফা দাবি আদায় হচ্ছে না, ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
Advertisement
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ডা. সাহেনা আক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সাহেনা কাগজে-কলমে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করলেও হোস্টেল কেন্দ্রিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক পদে দলীয় কট্টরপন্থি শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছেন, যারা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। তত্ত্বাবধায়ক নিজে তার কাছে অভিযোগ নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ১৬ জুলাই চমেক ক্যাম্পাসে যারা কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদের অভিভাবক-কল ও শোকজ করেছেন অধ্যক্ষ সাহেনা। মিছিলে যাওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তালিকা করে তাদের ডেকে নিয়ে হয়রানি করেছেন। ক্লাস বর্জন করায় শিক্ষার্থীরা কীভাবে বিসিএস পাস করেন তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নাম পুলিশের নিকট জমা দেওয়ার হুমকি দেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ছবি তুলে নিয়ে যান।
এএজেড/ইএ/জিকেএস
Advertisement