বিনোদন

শিমলা জয় করলো দাঁড়কাক

বাংলাদেশি স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকী। তার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দাঁড়কাক (র‍্যাভেন) এ বছরের ১০ম শিমলা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ সমালোচক পুরস্কার (স্পেসাল জুরি অ্যাওয়ার্ড) জিতে নিয়েছে।

Advertisement

উৎসবটি গত ১৬ থেকে ১৮ অগাস্ট ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী শিমলার ঐতিহাসিক গ্যাইতি থিয়েটার কালচারাল কমপ্লেক্সে আয়জিত হয়। সেখানে নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকী উপস্থিত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

গেল ১৮ অগাস্ট চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কারজয়ী সকল নির্মাতাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি হিমাচল প্রদেশের গভর্নর শিভ প্রতাপ শুক্লা। অনান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দ্যা ব্যান্ডিট কুইন খ্যাত স্বনামধন্য বলিউড অভিনেত্রী সিমা বিশ্বাস, হিমাচল সরকারের ভাষা ও সংস্কৃতি অধিদপ্তরের প্রধান এবং ফেস্টিভ্যালটির পরিচালক পুস্প রাজ ঠাকুর।

আরও পড়ুন

Advertisement

ফাউন্ডেশন চালু করে বন্যার্তদের পাশে আসিফ আকবর শিল্পী নেই, বন্যার্তদের পাশে আইয়ুব বাচ্চু ফাউন্ডেশন

প্রতিবছর ভারতের অন্যতম এই উৎসবটি একত্রে আয়োজন করে হিমালায়ান ভেলোসিটি, হিমাচল প্রদেশের ভাষা ও সংস্কৃতি অধিদপ্তর (ল্যাক) এবং ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। প্রখ্যাত লেখক শহিদুল জহিরের একটি ছোটগল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এ চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন পরিচালক জায়েদ সিদ্দিকী। দাঁড়কাক পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর নির্ভরশীল একজন বয়স্ক মানুষ তোরাব শেখের অস্তিত্ব সংকটের গল্প বলে। অর্থ উপার্জন করে না দেখে সে সংসারে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় বোধ করে। তার অজান্তে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়ায় সে ক্ষুব্ধ হয়, অপমানিত বোধ করে। তোরাব শেখ সিদ্ধান্ত নেয় স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়ার। সে চলে গেলে তারপরই বাকিরা বুঝতে পারে সংসারে তার অস্তিত্ব কতটা কাঙ্ক্ষিত। দাঁড়কাক চলচ্চিত্রে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রতিথযশা অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আরও অভিনয় করেছেন অভিনেতা আমিনুর রহমান মুকুল, ইকবাল হোসেন, টুনটুনি সোবহান, ফজলুল হক, তাহুয়া লাবিব তুরা এবং এ.বি.এম. সাঈদুল হক। এ ছাড়াও এর মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে জেরিন আক্তার শিমুল এবং আখলাকুজ্জামান খানের।

চলচ্চিত্রের পরিচালক নিজেই এর প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন। নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন সাইয়্যিদ শাহজাদা আল কারীম, ইসরাত জাহান, সাকিব ইফতেখার এবং হাসিব শাকিল। চিত্রগ্রাহক হিসেবে চলচ্চিত্রটির দৃশ্যধারণ করেছেন হাসনাত সোহান। চলচ্চিত্রটির সম্পাদনা ও শব্দ পরিকল্পনা করেছেন সুজন মাহমুদ। লাইন প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন মশিউর রহমান, শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন জায়েদ সিদ্দিকী ও তাসনিম নিশো। নিশো একই সাথে প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া সহকারী পরিচালক ছিলেন আখলাকুজ্জামান খান এবং মল্লিকা রায়। সহকারী শিল্প নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন দুর্জয় রায় এবং পোশাক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন তানজিনা ইসলাম।

পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি জানিয়ে পরিচালক বলেছেন, ‌‌‘চলচ্চিত্রটি বিগত ২ বছর ধরে শিল্পী ও কলাকুশলীদের আন্তরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এই পর্যায়ে এসেছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পাওয়ার আনন্দ তাই টিমের সবার। আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাই। এটি খুবই উৎসাহজনক এবং আনন্দের একটি স্বীকৃতি আমাদের জন্য।’

তিনি আরও জানান, চলচ্চিত্রটি এখন পর্যন্ত আটটি দেশে ১০টি চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে। হোম রিফ্লেকটর প্রোডাকশন্সের ব্যানারে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। দুটি স্বনামধন্য পরিবেশক কোম্পানি ইতিমধ্যে চলচ্চিত্রটির গ্লোবাল পরিবেশক হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এর একটি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক স্ক্রিনএক্সকোপ এবং আমেরিকাভিত্তিক সেভেন পামস এন্টারটেইনমেন্ট।

Advertisement

এলএ/এমএস