আইন-আদালত

শিক্ষার্থী ইয়ামিন হত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকার সাভারে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

Advertisement

রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন নিহতের মামা আব্দুল্লাহ আল কাবির। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সাভার থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষে মামলা দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান মারুফ ও সাকিল আহমাদ।

জানা গেছে, নিহত শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন এমআইএসটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্ ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) আব্দুল্লাহিল কাফী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুর রহমান, সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজামান সাভার থানা, সাভার থানার উপ-পরিদর্শক সুদীপ, হারুন অর রশিদ ও সাব্বির, সাভারের আন্দোলনে গুলি করে ভাইরাল হওয়া নড়াইলের বাবুল শরিফ (নারী পুলিশ সদস্যের স্বামী), সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব ও ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম।

Advertisement

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী-এমপি-পুলিশ-সাংবাদিকসহ আসামি ৪৯৩শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরও দুই হত্যা মামলাশেখ হাসিনার ৪ চাচাতো ভাইয়ের নামে খুলনায় মামলা

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মামলার আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মলনে আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। এতে তিনি বাংলদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ দেন। আসামি ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্রদের নির্মূল করার জন্য ছাত্রলীগ যথেষ্ঠ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের নিকটে নিয়ে দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে বুকের বাঁপাশে গুলি করে। গুলিতে ইয়ামিনের বুকের বামপাশে অসংখ্য স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়।

এমতাবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এপাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকে। ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয় এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্যকে বের করে তার পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেয়। ঐ পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃতভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার ওপরের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে নিঃশ্বাস নিতে তখনও দেখা যায়। এমতাবস্থায় পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ হতে আরেক পাশ ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জেএ/এসএনআর/এমএমএআর/জেআইএম

Advertisement