ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা ফেনীর। বিদ্যুৎসংযোগ না থাকায় সেখানে প্রায় সব মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে। জেনারেটরের মাধ্যমে টাওয়ার সচল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অপারেটরগুলো। তাতেও হিমশিম অবস্থা।
Advertisement
ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে ফেনী জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখতে জেনারেটরগুলোকে বিনামূল্যে ডিজেল সরবরাহ করতে নির্দেশ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তারপরও জেলাটিতে মোবাইল টাওয়ার সচল করার প্রক্রিয়ায় কোনো উন্নতি নেই। বরং আরও অবনতি হয়েছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার তথ্যানুযায়ী-ফেনীর প্রায় ৯২ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারই অচল। তবে নোয়াখালী, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরের অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছে। সেখানকার অনেক অচল হয়ে পড়া টাওয়ার সচল করা সম্ভব হয়েছে।
বিটিআরসির তথ্যমতে, বন্যায় বর্তমানে ১১টি জেলায় মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে। জেলাগুলো হলো- নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ও কক্সবাজার।
Advertisement
সবশেষ তথ্যানুযায়ী- ফেনীর ৬৫৩টি টাওয়ারের মধ্যে অচল হয়ে পড়েছে ৫৯৯টি। সচল আছে মাত্র ৫৪টি। অর্থাৎ জেলার মোট মোবাইল টাওয়ারের ৯১ দশমিক ৭ শতাংশ টাওয়ারই অচল। এর আগের রিপোর্ট অনুযায়ী ৫৯৮টি টাওয়ার অচল ছিল। অর্থাৎ জেনারেটরে ডিজেল ফ্রি ঘোষণার পর নতুন করে আরও একটি টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে।
তবে বন্যাকবলিত কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ অন্যান্য জেলাগুলোর পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। জেলাগুলোতে বিদ্যুৎসংযোগ ফেরায় টাওয়ারগুলো ধীরে ধীরে সচল করা সম্ভব হচ্ছে।
বিটিআরসির তথ্যমতে, বর্তমানে নোয়াখালীতে ১৩৪টি, লক্ষ্মীপুরে ১৪, কুমিল্লায় ১৫৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪, চট্টগ্রামে ৫৩, খাগড়াছড়িতে ৩০, হবিগঞ্জে দুটি, মৌলভীবাজারে ৩৪, সিলেটে ৯টি টাওয়ার অচল। তাছাড়া নতুন করে বন্যার কবলে পড়া কক্সবাজার জেলায় ৫টি মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে।
এদিকে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারি অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন্যাকবলিত এলাকায় অবকাঠামো ও যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মোবাইল অপারেটর ও টাওয়ারকো অপারেটরদের জন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল জনবল, নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম, জেনারেটর ও জ্বালানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
Advertisement
তাছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম-ফেনী অংশের সড়কের ওপর তীব্র পানির চাপের কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এ যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছানো এবং নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপনের কাজ ভালোভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সব অংশীজনদের সম্ভাব্য সব প্রচেস্টা অব্যাহত রয়েছে। সহসাই এ দুর্যোগ থেকে উত্তরণ ও নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন কাজে অগ্রগতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এএএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম