নোয়াখালীর পানি ঢুকে পড়েছে লক্ষ্মীপুরে। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল থেকে এ পানির চাপ বাড়ছে। এতে জেলার সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নতুন করে নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
Advertisement
আজ মেঘনা নদীতে জোয়ারের সময় কিছু পানি ঢুকলেও পরে কমতে থাকে। জেলার বিভিন্ন স্থানে দুপুরে তীব্র রোদ দেখা যায়। তবে বিকেল থেকে পাশের জেলা নোয়াখালীর পানির চাপ বেড়েছে লক্ষ্মীপুরে।
সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের কারণে এখন পর্যন্ত জেলায় ৬ লাখ ৫৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি। তাদের জন্য জেলা প্রশাসন ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন শেল্টারে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নোয়াখালীর পানির চাপে ঢেউ পড়ছে চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী,হাজীরপাড়া, দত্তপাড়া, মান্দারী, কুশাখালী, তেওয়ারীগঞ্জসহ কয়েকটি ইউনিয়নে। এসব এলাকায় ভারী বর্ষণের পানি সঙ্গে যোগ হচ্ছে নোয়াখালী থেকে আসা পানি। চারদিকে পানি থই থই করছে। অনেক এলাকায় কোমরসমান পানি রয়েছে। ঘরবাড়ির ভেতরেও পানি।
Advertisement
লক্ষ্মীপুর সদরের রহমতখালী খাল, রামগতি, কমলনগরের ভুলুয়া নদী, রামগঞ্জের ওয়াপদা, বিরেন্দ্র খাল, রায়পুরের ডাকাতিয়া নদীসহ বিভিন্ন স্থানে নদী-খাল দখল করে মাছ চাষ, সেতু, কালভার্ট, রাস্তা, দোকানপাটসহ স্থাপনা নির্মাণ করায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জমা পানি নামতে বেগ পেতে হচ্ছে।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মামুনুর রশিদ বলেন, ‘হঠাৎ করে আমাদের এলাকায় পানি বাড়ছে। এলাকায় দিনভর বৃষ্টি নেই। এগুলো নোয়াখালী থেকে আসা পানি। এতে মানুষের দুর্ভোগ-কষ্ট বাড়ছে।’
চরশাহী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম রাজু জানান, নোয়াখালীর পাশের সীমানায় তার ইউনিয়ন। এতে নোয়াখালীর পানির চাপ এদিকে আসছে। ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাটে এখন ২-৪ ফুট পানি।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোশারেফ হোসেন বলেন, বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। তবে পানির কারণে চরশাহীসহ কিছু এলাকায় যাওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার কাজ চলছে। তারা চালসহ সরকারি সহায়তা পাবেন।
Advertisement
সন্ধ্যায় কথা হয় লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ানের সঙ্গে। তিনি বলেন, নোয়াখালীর পানির চাপ লক্ষ্মীপুরে আসছে। এতে পানি কিছুটা বাড়ছে। তবে বৃষ্টি না থাকায় রায়পুর ও রামগঞ্জে পানি কমছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী দুদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।
কাজল কায়েস/এসআর/জেআইএম