আফ্রিকা এবং এর বাইরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস। উগান্ডায় দুজন এমপক্স ভাইরাসের ক্লেড ১বি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে একজন ট্রাকচালক। তাদের দুজনকেই এনতেবের একটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
Advertisement
এদিকে বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, ঘানা, আইভরি কোস্ট, কেনিয়া, লাইবেরিয়া, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন, থাইল্যান্ড এবং উগান্ডায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই ভাইরাসের কারণে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। তবে তারা জোর দিয়ে বলেছে, এমপক্স ভাইরাসের কারণে কোভিডের মতো পরিস্থিতি হবে না।
গত দুই বছরের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা জারি করা হলো।
Advertisement
বর্তমানে এই ভাইরাসের ক্লেড১ ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। এটি আগের ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে আরও গুরুতর বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি ত্বকের সংস্পর্শ থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
২০২২ সালে আফ্রিকায় প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। মূলত কঙ্গোতেই প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বুরুন্ডিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৮ জন। সেখানে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
তবে ক্যামেরুনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩৫ জন এবং মারা গেছে দুজন। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্তে আক্রান্তের সংখ্যা ২১৩, আইভরি কোস্টে ২৮ জন আক্রান্ত এবং একজন মারা গেছে, কঙ্গোতে আক্রান্ত ১৪৬ জন এবং মৃত্যু ১, ঘানায় আক্রান্ত চারজন, লাইবেরিয়ায় পাঁচজন, নাইজেরিয়ায় ২৪, রুয়ান্ডায় ২, দক্ষিণ আফ্রিকায় আক্রান্ত ২২ এবং মৃত্যু হয়েছে তিনজনের, কেনিয়ায় আক্রান্ত এক এবং মোজাম্বিকেও আক্রান্ত একজন।
এদিকে পাকিস্তানে আক্রান্ত হয়েছে একজন, ফিলিপাইনে একজন এবং থাইল্যান্ডে একজন। ২০২২ সালে ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু দেশসহ প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। সেসময়েও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পূর্বে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল এই ভাইরাস। গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এই ভাইরাসের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের সময় কমপক্ষে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে এটি ছড়ায়। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গের পাশাপাশি পুঁজ-ভরা ক্ষত সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাব সামান্য দেখা গেলেও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কঙ্গোতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭০০ মানুষ।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে নতুন করে এমপক্স ভাইরাস শনাক্ত এমপক্স রুখতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ চীনের এমপক্স কী? কীভাবে ছড়ায় ও এর লক্ষণগুলো কী?আফ্রিকায় সংক্রমিত এলাকাগুলোতে এমপক্স প্রতিরোধে টিকা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি)। তবে ইসিডিসি বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি এমপক্স পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও এটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।
টিটিএন