দেশের বেশ কয়েকটি জেলা যখন বন্যা কবলিত তখন দাবি উঠেছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে কিছু টাকা অনুদান দেওয়া। তবে ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন মসজিদে দানকৃত টাকা মসজিদের উন্নয়ন ব্যতীত অন্য কোথাও অনুদান দেওয়া যাবে না। এটা ইসলামের শরীয়তে নাজায়েজ।
Advertisement
জানা গেছে, সর্বশেষ শনিবার (১৭ আগস্ট) ৩ মাস ২৬ দিন পর পাগলা মসজিদের নয়টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গণনা শেষে সেই টাকার পরিমাণ ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা দাঁড়ায়। এছাড়া দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও ছিল। এর আগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। প্রতিবারই দানবাক্স খুললে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায়।
একটি সূত্র দাবি করছে, পাগলা মসজিদ কমিটির বেশিরভাগ সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা পলাতক রয়েছেন। তাই মসজিদ পরিচালনা কমিটির মিটিং ছাড়া এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে বন্যা কবলিতের মাঝে অনুদান দেওয়ার বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ছড়িয়েছে তা গুজব।
Advertisement
আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা সোয়াইব বিন আব্দুর রউফ জানান, যিনি দান করেছেন তিনি মসজিদকে কেন্দ্র করে দান করেছেন। তাই শরীয়তের মাসলাগত দিক দিয়ে মসজিদের দানের টাকা অন্য কোথাও ব্যয় করা যাবে না। এটা নাজায়েজ। দাতা যেখানে দান করেছে সেটা রক্ষা করাই হবে মূল কাজ। মসজিদ কেন্দ্রিক ক্যাম্পেইন করা যেতে পারে। কিন্তু মসজিদের ফান্ড থেকে দান করা যাবে না।
এ সময় করোনাকালীন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবীদেরকে পাগলা মসজিদের ফান্ডের টাকা থেকে অনুদান দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটি পাগলা মসজিদের ব্যাংকে জমাকৃত টাকার সুদের অংশ থেকে দিয়েছিল বলে বিষয়টি জানানো হয়। যদি মসজিদ ফান্ড থেকে এই কাজটি করে থাকে সেটা জায়েজ হয়নি। শরীয়তের দৃষ্টিতে সেটা ভুল পদক্ষেপ ছিল। শরীয়তের মূল বার্তা হলো মসজিদের ফান্ডের টাকা অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে না।
এসকে রাসেল/এফএ/এমএস
Advertisement