ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের অন্তত ১২ জেলা। এসব জেলায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টেলিযোগাযোগ সেবা। ফলে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা। পানিতে আটকা পড়া অসহায় মানুষ যোগাযোগ করতে পারছেন না স্বজনদের সঙ্গে। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কয়েক লাখ মানুষ।
Advertisement
বিটিআরসির তথ্যমতে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত থেকে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে টেলিযোগাযোগ সেবার উন্নতি হতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎসংযোগ ফেরায় সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্কও ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে। টেলিযোগাযোগ সেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া জেলার সংখ্যাও কমেছে।
তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ফেনী। জেলাটিতে অচল হয়ে পড়া মোবাইল টাওয়ারগুলো চেষ্টা করেও সচল করা যাচ্ছে না। উল্টো আরও বেশি সংখ্যক টাওয়ার অচলের খবর পাওয়া যাচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জেলার প্রায় ৯৩ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে উদ্বেগ বাড়ছে মানুষের।
বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের সবশেষ তথ্যমতে, বন্যাকবলিত ১২ জেলার মধ্যে ১০ জেলার কিছু এলাকায় এখনো টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। সেগুলো হলো- ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট।
Advertisement
সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ফেনী। জেলাটির ৯২ দশমিক ৬ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার বা সাইট এখন অচল। সেখানে থাকা ৬৫৩টি টাওয়ারের মধ্যে ৬০৫টি অচল হয়ে পড়েছে। সচল আছে মাত্র ৪৮টি। সেগুলোও কতক্ষণ সচল রাখা সম্ভব হবে, তা নিয়ে শঙ্কায় অপারেটররা।
আরও পড়ুন
বন্যায় ফেনীর ৯০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল, টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উদ্ধার আর ত্রাণের অপেক্ষায় বহু মানুষগত দুদিন ধরে খারাপ পরিস্থিতি থাকলেও কিছুটা উন্নতি হয়েছে কুমিল্লা ও নোয়াখালীর টেলিযোগাযোগ সেবা। নোয়াখালীর এক হাজার ১৫১টি টাওয়ারের মধ্যে ১৭৫টি এবং কুমিল্লায় ২ হাজার ৫২৯টি টাওয়ারের মধ্যে ২৪৩টি অচল রয়েছে। বাকিগুলো সচল। অচল টাওয়ারগুলোও দ্রুত সচল করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে অপারেটরগুলো।
এছাড়া লক্ষ্মীপুরে ৩৬টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০টি, চট্টগ্রামে ৮৬টি, খাগড়াছড়িতে ৩০টি, হবিগঞ্জে তিনটি, মৌলভীবাজারে ৪০টি এবং সিলেটে ৭টি মোবাইল টাওয়ার অচল।
Advertisement
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১০টি ভি-স্যাট প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে পাঁচটি ফেনী জেলার প্রশাসককে পাঠানো হয়েছে। ভি-স্যাটগুলো ব্যবহার করে টেলিযোগাযোগ সেবা সচল রাখার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
টেলিকম অপারেটরদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অটুট রেখে পর্যাপ্ত পাওয়ার ব্যাকআপ (ব্যাটারি ব্যাকআপ, ডিজেল জেনারেটর, পোর্টেবল জেনারেটর ইত্যাদি) রাখার ব্যবস্থা নেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মোবাইল অপারেটরগুলো জানিয়েছে, মূলত বিদ্যুৎসংযোগ না থাকায় মোবাইল টাওয়ারগুলো অচল হয়ে পড়ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশনায় তারা টাওয়ারগুলো সচল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। একই সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের বিনামূল্যে ইন্টারনেট ও ফ্রি মিনিট দিচ্ছেন তারা।
এএএইচ/কেএসআর/এমএস