দেশজুড়ে

৩৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন গুলিবিদ্ধ সুমন

নরসিংদীর মাধবদীতে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সুমন রহমান অনিক (২০) মারা গেছেন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাই জুলহাস মিয়া।

Advertisement

নিহত সুমন মাধবদী পৌর শহরের সিদ্দিকনগর মহল্লার মৃত হাসেন আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় জালপট্টি জামেয়া-ই-এমদাদিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্র ছিলেন।

নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৬ ভাই ৩ বোনের মধ্যে সুমন সবার ছোট। স্থানীয় একটি মাদরাসা থেকে আগামী বছর তার দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। পরিবারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ভাইদের সঙ্গে স্থানীয় বাজারে সবজি বিক্রি করতেন।

২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সরকারের জারিকৃত কারফিউয়ের প্রথমদিনে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলিবর্ষণ করলে তার পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিটি তার পেটে ঢুকে পাকস্থলি ছিদ্র হয়ে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

এ ঘটনায় তার তিনবার অস্ত্রোপচার করা হয়। সম্প্রতি তার পেটে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার কারণে আবারো অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন। গত বুধবার বিকেলে তাকে কুর্মিটোলা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। নিহতের বড় ভাই জুলহাস মিয়া বলেন, ভাইটা আমার ৩৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শহীদ হলো। অনেক কষ্ট হয়েছে তার। চোখের সামনে সব দেখেছি। আমরা গরিব মানুষ, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে বেশি টাকা না লাগলেও ওষুধ কিনতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। সান্ত্বনা এতটুকুই ভাইটা দেশের জন্য শহীদ হলো। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আল্লাহ বেহেশত নসিব করেন।

সঞ্জিত সাহা/এফএ/এমএস