প্রাণী সুরক্ষা ও মানবিক অধিকার সংরক্ষণে প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ এর পরিবর্তে নতুন আইন প্রণয়ন এবং এসব বিষয়ে বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাণিপ্রেমীদের বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
Advertisement
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে এনিমেল লাভারস অব বাংলাদেশ (এএলবি) এনিমেল শেল্টার কর্তৃক আয়োজিত মানবন্ধনে প্রাণিপ্রেমীরা এ দাবি জানান।
এএলবি এনিমেল শেল্টারের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা দীপান্বিতা হৃদি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রাণিপ্রেমীদের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারি, যা সর্বত্র প্রাণীদের পক্ষে একটি সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারকে কখনো অসহায় প্রাণীদের বিশেষত শহরের মালিকানাবিহীন প্রাণীদের অধিকার সংরক্ষণে তেমন লক্ষণীয় কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বিগত ৫৩ বছরেও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি আলাদা প্রাণিকল্যাণ অধিদপ্তর বা শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। মানুষের মতো প্রাণীরাও প্রতি পদে অত্যাচারিত হয়ে আসছে, কেউ তাদের দিকে লক্ষ্য করেনি।
Advertisement
দীপান্বিতা হৃদি বলেন, দেশজুড়ে বিভিন্ন সময়ে আমরা প্রাণীদের দুর্ভোগ এবং অত্যাচারের প্রমাণ বিভিন্ন মাধ্যমে এবং সরাসরি লক্ষ্য করে থাকি। বর্তমান আইনে বিদ্যমান বিভিন্ন জটিলতার কারণে এসব সমস্যার যথাযথ সমাধান করা সম্ভব হয় না। পাশাপাশি প্রাণীদের নিয়ে কাজ করা কর্মীদের সম্মুখীন হতে হয় নানারকম বাধা-বিপত্তি, এমনকি শারীরিক ও সামাজিক লাঞ্ছনারও।
তিনি বলেন, দেশ সংস্কারের কাজ চলছে। আমরা প্রাণিপ্রেমীরা চাই প্রাণীদের জন্য নতুন করে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা হোক। যেন সেই আইনের ভিত্তিতে শুধু প্রাণীদের প্রতি অত্যাচার বন্ধই নয়, সব প্রাণীর সুরক্ষাও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
এএলবি এনিমেল শেল্টারের দাবিগুলো হলো:
প্রাণিকল্যাণ আইনের মাধ্যমে রাস্তার ও পোষা প্রাণীদের সুষ্ঠু অধিকার নিশ্চিতকরণ; প্রাণীদের ওপর নিষ্ঠুরতা বা হত্যার সুষ্ঠু বিচারে কারাদণ্ড ও জরিমানার ভিত্তিতেযথাযথ শক্ত আইন প্রনয়ন; প্রাণিকল্যাণ আইনকে আমলযোগ্য করা। প্রাণিকল্যাণ আইনের প্রয়োগে পুলিশ বাহিনীর পূর্ণ সহায়তা; প্রাণিকল্যাণ আইনের প্রয়োগে মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ভূমিকা গ্রহণ।
Advertisement
এছাড়াও প্রাণিকল্যাণ আইনের আওতায় থানায় সরাসরি যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এবং সংস্থার মামলা দাখিল করার সুযোগ; প্রাণিপ্রেমীদের রাস্তার মালিকানাবিহীন প্রাণীদের খাবার দেওয়ার পূর্ণ অধিকার প্রদান; প্রাণী নিষ্ঠুরতা দমন ও অধিকার সংরক্ষণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এবং প্রাণিকল্যাণ কর্মীদের টিম গঠন।
পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মালিকানাবিহীন প্রাণীদের সহায়তা ও মনিটরিং করার সুবিধার্থে একক প্রাণিকল্যাণ অধিদপ্তর বা শাখা গঠন; সরকার থেকে ডিসিসি/লাইভস্টক ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে মালিকানাবিহীন কুকুর বন্ধ্যাত্বকরণ এবং টিকাদানের প্রকল্প নেওয়া। সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাতঙ্ক টিকা দেওয়া হলে মানুষের মন থেকে এদের প্রতি বিরূপ মনোভাব কমে যাবে।
এনএস/এমকেআর/এএসএম