চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত দেশের ৮ জেলার ২৯ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ সচিবালয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এ তথ্য জানিয়েছেন।
Advertisement
ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এসব অঞ্চল থেকে দূরে যারা অবস্থান করছেন; তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন স্বজনদের নিয়ে। বন্যায় সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় খোঁজ নিতে পারছেন না। এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার শরণাপন্ন হচ্ছেন তারা। তাদের পোস্টে উঠে এসেছে হতাশা ও আর্তনাদ।
মাহতাব হোসেন লিখেছেন, ‘গতকাল থেকে আমার বোনের পরিবারের খোঁজ পাচ্ছি না। পরশুরাম, ফেনী। কেউ কি আছেন- সেখানে বসবাস করেন, কোনো তথ্য দিতে পারেন?’
একরাম হোসাইন লিখেছেন, ‘পরশুরাম এখন দুুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপ! তেমন কোনো উদ্ধার কার্যক্রম নেই। কী হচ্ছে, মানুষগুলো কেমন আছেন কেউ বলতে পারছেন না। স্পিড বোট বা নৌকার চেয়েও হেলিকপ্টার রেসকিউ প্রয়োজন।’
Advertisement
ইকবাল বাহার জাহিদ লিখেছেন, ‘গতকাল রাত থেকে ফুলগাজী ও পরশুরামের সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ। কাউকে পাচ্ছি না। মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে না, ইলেক্ট্রিসিটি নাই। স্পিড বোট ছাড়া ফেনী থেকে ফুলগাজী ও পরশুরাম যাওয়ার আর কোনো ব্যবস্থা নেই। হাজার হাজার বাড়িতে লাখো মানুষ পানিবন্দি। গতকাল পর্যন্ত সবার কান্নার শব্দ শুনেছি, আজ আর কিছুই জানতে পারছি না।’
আরও পড়ুনবৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় রাজধানীর সড়কভাইরাল যেন না হয় ভাইরাসতিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের টিম চেষ্টা করছে তাদের উদ্ধার ও কিছু খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কাছাকাছি গিয়ে সবাই অসহায়। সংবাদকর্মীদেরও প্রত্যন্ত গ্রামে যাওয়া সম্ভব না। ব্যাপক পানির স্রোত এবং পর্যাপ্ত স্পিড বোট নেই। যারা উদ্ধার করতে যাবেন, তারাও যেতে পারছেন না। তাদের উদ্ধার কাজের জন্য দরকার অনেক বেশি কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনী। দরকার হেলিকপ্টার ও শত শত স্পিড বোট। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই মহাবিপদ থেকে রক্ষা করুন।’
এম ওমর ফয়সাল লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ ফেনী জেলার ওপর রহম করুন। আমাদের ফটিকছড়ি উপজেলায় নাজিরহাট পৌরসভাসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’
স্রোতস্বিনী শ্রেয়সী উল্লেখ করেছেন, ‘ভাই, হেলিকপ্টার দিয়ে হলেও আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করুন। যত টাকা লাগে আমি দেবো! প্রবাসী ভাইয়ের আর্তনাদ!’
Advertisement
আবদুর রহিম লিখেছেন, ‘টাকা, ভাড়া, সকল খরচ আমরা দেবো। আমাদের ফেনীকে নৌকা, স্পিড বোট ব্যবস্থা করে দিন।’
জাকিয়া শিশির লিখেছেন, ‘ফেনীতে কোনো উদ্ধারকারী থাকলে সাড়া দিন। দুইটি ছোট বাচ্চা নিয়ে বিপদে আছে। পুরো ঘর ডুবে গেছে।’
এসইউ/এএসএম