ফিচার

সাপের উপদ্রব থেকে কীভাবে রক্ষা পাবেন

আদনান আজাদ আসিফ

Advertisement

বন্যাদুর্গত এলাকায় সাপের উপদ্রব একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে। মানুষ সাপের উপদ্রপ থেকে কীভাবে রক্ষা পাবেন, এসময় সাপে কাটলে কী করবেন, কী করা উচিত নয়। বাড়িতে মরিচ পোড়া বা কার্বলিক অ্যাসিড রাখলে সাপ আসবে না বলে অনেকেই প্রচার করছেন। এগুলো কোনো কাজে আসবে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। বিজ্ঞানে এর কোনো ভিত্তি নেই। মশারি টাঙানোটাই একমাত্র সঠিক পদ্ধতি। মরিচ পোড়াসহ এগুলো সব ফেক। এভাবে কখনো সাপ তাড়ানো যায় না। ফেসবুকে মানুষ এসব না জেনে পোস্ট দিচ্ছেন এবং এগুলো প্রচুর শেয়ার করছেন। এজন্য মানুষ ভুল জিনিসগুলো জানছেন। এগুলো ফলো করতে গেলে মানুষ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

সাপ সচরাচর গর্তে থাকা একটা প্রাণী। এরা দিনের বেশিরভাগ সময় অন্ধকারে নিজেদের লুকিয়ে রাখে। সেটি নির্বিষ ঢোঁড়া সাপ থেকে গোখরা পর্যন্ত সবাই। এরা সব সময় নিজেদের মানুষের কাছ থেকে আড়াল করে রাখে। শুধু মানুষ নয়, সূর্যের তাপ বা আলো থেকে বাঁচার জন্যও নিজেদের আড়াল করে রাখে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ সাপই নিশাচর, দিনে এরা গর্তে থাকে। সেটি মাটির গর্ত হতে পারে, গাছের গুঁড়ির গর্ত হতে পারে, ইটের স্তূপ বা বাড়ির পুরোনো প্রাচীরের কোনো গর্তেও থাকতে পারে। এসব জায়গা এখন বন্যার পানি দিয়ে পরিপূর্ণ হবে। এ কারণে যে সাপগুলো লুকিয়ে ছিল, তারাও এখন পানি থেকে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি আশ্রয় খুঁজবে। সেটা অবশ্যই শুকনো ও উঁচু জায়গা।

আরও পড়ুনবন্যা ও এর পরবর্তী সময়ে সতর্ক থাকবেন যেভাবেবন্যার আগে কী কী খাবার সংরক্ষণ করে রাখবেন?

এখন যে জায়গায় মানুষ ঘুমাবে; সে জায়গাটা হবে উঁচু ও শুকনো জায়গা। তাই সাপও সেখানে আশ্রয় নিতে চাইবে। সাপ থেকে সতর্ক থাকার প্রধান উপায় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো। মশারি শুধু টাঙালে হবে না, মশারি গুঁজে ঘুমাতে হবে। অনেকে আছেন মশারি না গুঁজে ঘুমান, সেটি করলে হবে না। এসময় আশ্রয়কেন্দ্র বা ঘরে জুতা পরার সময় বা হাঁড়ি-পাতিল, বাটি স্পর্শ করার আগে ভালো করে দেখে নিতে হবে; সেখানে সাপ লুকিয়ে আছে কি না। কোনো কিছু স্তূপ করে রাখা থাকলে সেটি দোতলা, তিনতলা যেখানেই হোক, সেখান থেকে কোনো জিনিসপত্র বের করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, লাঠির সাহায্য নিতে হবে। সরাসরি হাত দিয়ে সরানো যাবে না। অন্ধকার স্থান দিয়ে কোনোভাবেই হাঁটা যাবে না। লাইট ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

Advertisement

এরপরেও যদি কেউ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন, তাহলে দেরি না করে তাকে অবশ্যই জেলা সদর বা উপজেলা হাসপাতালে নিতে হবে। অন্য কোনো হাসপাতালে সাধারণত সাপে কাটার কোনো চিকিৎসা হয় না। বন্যার সময় যদি সাপ সামনে পড়ে যায়, তখন সাপ না মেরে বন বিভাগকে খবর দিন বা সম্ভব হলে ৯৯৯-এ ফোন দিন। তাহলে সাপ রেসকিউ করার টিম পাঠাবে। মানুষ সাপকে আক্রমণ করতে গিয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। এটা করা যাবে না। সাপ দেখলে তার থেকে দূরে থাকতে হবে।

লেখক: ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার ও গবেষক।

এসইউ/জেআইএম

Advertisement