ভারতের বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদ জানিয়ে মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে ওঠে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। বুধবার (২১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
দুই হল ও মেসের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ক্যাম্পাস ও মহাসড়কে মিছিল করে। এ সময় ‘ঢাকা না দিল্লি! ঢাকা.. ঢাকা..’, ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দেও জনগণ’সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
জানা যায়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া রাকিব আহমেদ জানান, ভারত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শহীদ আবরার আওয়াজ তুলেছিল। তাকে ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ভোটচোর আওয়ামী লীগ দিল্লিকে প্রভু বানিয়েছিল। বর্তমান সরকার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ছাত্র জনতার সরকার। এই সরকারের উচিত দিল্লির আগ্রাসনের কঠিন জবাব দেওয়া।
Advertisement
তিনি জানান, ভারত তার আগ্রাসনের কারণে প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আধিপত্য চললে বাংলাদেশের জনগণও ভারতকে প্রত্যাখ্যান করবে।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, বন্ধুত্ব হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে, প্রভুত্বের ভিত্তিতে নয়। অবিলম্বে এসব নদীর বাঁধ গুড়িয়ে ফেলতে হবে। আন্তর্জাতিক নদীতে বাঁধ চলবে না। এটা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। এটা ভারতের কৃত্রিমভাবে তৈরি করা বন্যা। বাঁধ খুলে তারা আজ উল্লাস করছে। আমরা হুঁশিয়ারি দিতে চাই, ছাত্র জনতা ছেড়ে দেবে না।
তিনি বলেন, খুনি হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার আগেই ভারতের সঙ্গে হওয়া অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। বন্দি বিনিময় চুক্তির কারণে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফেরত দিতে হবে। আপনারা যদি তা রক্ষা না করেন, তাহলে আমরা ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করবো।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেতাব হাসান বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে ডম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী বন্যা প্লাবিত। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি সংযোগ নদী রয়েছে, এর ৩০টিতে তারা বাঁধ দিয়েছে। আন্তজার্তিক নদীতে তারা বাঁধ দিয়েছে। আধিপত্যবাদী ভারত গ্রীষ্ম মৌসুমে বাঁধ বন্ধ করে রাখায় আমরা পানি পাই না। কৃষক ফসল ফলাতে পারে না। আর বর্ষা মৌসুমে বাঁধের কারণে পানিতে ডুবে মরতে হয়। আমরা এ দ্বিমুখী নীতি চাই না।
Advertisement
বিক্ষোভ ও সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তারেক মাহমুদ, রসায়ন বিভাগের মো. ইয়ামিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আরিফুল, বাংলা বিভাগের মিজানুর রহমান কাব্য প্রমুখ।
শাওন খান/এফএ/জিকেএস