ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব করলে তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন না প্রায় এক বছর। শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০২৩ সালের মে মাসে (৪ মে মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে)। আর একদিনের খেলায় তামিম ইকবাল জাতীয় দলের হয়ে শেষ মাঠে নেমেছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তামিম লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চড়ান না প্রায় আড়াই বছর ধরে। শেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২০ সালের ৯ মার্চ মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মাঝে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করা এবং বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বারকয়েক দেখা সাক্ষাতের পরও তামিম ইকবাল ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন কিনা।
Advertisement
সাংবাদিকরা তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু জানতে চাইলেই সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথা বলতেন তামিম। জানাতেন, বোর্ড সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনিই সব জানাবেন। কিন্তু আর জানানো হয়নি। এর মাঝে এই তো সেদিন দেখা মিললো তামিম ইকবালের। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা এসেছিলেন বিসিবি পরিদর্শনে। তার সঙ্গে ছিলেন তামিম। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে হোম অব ক্রিকেটের মাঠ, ড্রেসিংরুম, বিসিবি অফিস রুম, প্রেসিডেন্ট বক্স সব ঘুরিয়ে দেখান তামিম। আজ নতুন বোর্ড প্রধান ফারুক আহমেদের কাছেও তামিম ইস্যুতে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হলো। তামিমকে নিয়ে কী ভাবছেন? ফারুক আহমেদের সাজানো গোছানো জবাব, ‘এক্ষেত্রে খেলোয়াড়ের চিন্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তামিম কী চিন্তা করছে, তা জানা দরকার। প্রথম তার সঙ্গে কথা বলা দরকার।’ তামিম ইকবালকে তার দেখা দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে আখ্যা দিয়ে ফারুক বলেন, ‘আমার মনে হয় ওয়ান অব দ্য বেস্ট উই হ্যাভ এভার প্রডিউসড ইন বাংলাদেশ। তামিমকে খুব সেন্সেবল ছেলে। এদিক সেদিক না ঘুরে আমি দেখতে চাই তামিম আরও দুই-তিন বছর খেলবে। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত।’ কৌশলী ফারুক সঙ্গে যোগ করেন, ‘তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমতে কিন্তু কিছু যায় আসে না। ওর ফিটনেস থাকতে হবে, টিমে আসতে হলে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ফুলফিল প্রয়োজন। সভাপতি হিসেবে অফ দ্য রেকর্ড যদি জিজ্ঞেস করেন, আমি কিন্তু দেখতে চাই আরও দুই বছর ক্রিকেট খেলুক। আমি চাই আর কী!’
তামিমকে কোন ফরম্যাটে চান? সে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বিসিবির নতুন সভাপতি বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি তামিমকে টেস্ট আর ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই চান। তবে তামিমের টেস্ট খেলার মত ফিটনেস আছে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে তার।
তাই মুখে এমন কথা, ‘কোন ফরম্যাটে খেলবে, আমার মনে হয় ৫০ ওভার বেস্ট। লঙ্গার ভার্সন সবচেয়ে ভালো হতো তার যে অভিজ্ঞতা। কিন্তু এটার যে কষ্ট, হয়তো ওর শরীর নিতে পারবে না। আমি জানি না। এটা তামিমই বলতে পারবে। খুব ভালো হয় যদি ও খেলতে পারে।’
Advertisement
তামিম মাঠে না ফিরে বোর্ডে আসলেও তাকে বরণ করে নিতে আগ্রহী ফারুক। তিনি বলেন, ‘তামিম যদি আর খেলতে না পারে, বোর্ডে আসে; তাহলে আমি খুব খুশি হবো। আপনি দেখেন, তামিম আমার অন্তত বিশ বছরের ছোট হবে। যদি বেশি না হয়, কাছাকাছি হয়তো। সে সাবেক অধিনায়ক, তার মানে তার লিডারশিপ কোয়ালিটি আছে। এসব ছেলে যত আসবে, তাদের যদি আমরা তাড়াতাড়ি কাজে লাগাতে পারি; তাহলে কিন্তু অনেক আইডিয়া আসবে, অনেক ভালো কিছু করতে পারবে। দেখি ওর সঙ্গে কথা বলে ব্যক্তিগতভাবে, ওর পরিকল্পনা কী, এভাবে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস