সিকিমে পাহাড় ধসে ভেঙে পড়েছে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশনের (এনএইচপিসি) একটি বাঁধ। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকালে বালুতরে এনএইচপিসির তিস্তা স্টেজ–৫ বাঁধে এই ঘটনা ঘটে। সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
Advertisement
ভিডিওতে দেখা যায়, পাহাড়ের বিশাল অংশ ধসে পড়ছে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর। তাতে মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ে বাঁধের বড় অংশ।
আরও পড়ুন>>
ত্রিপুরায় বাঁধ খুলে দিলো ভারত, হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ মিরসরাইয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, মাছচাষে শত কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কাতবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। গত কয়েকদিনে একাধিকবার ছোটখাটো ভূমিধসের কারণে আগেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।
Advertisement
৫১০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০০৮ সালে চালু হয়েছিল। এর একটি ভূগর্ভস্থ পাওয়ারহাউজ রয়েছে। আর মাটির ওপর রয়েছে মূল সঞ্চালন লাইন। ভূমিধসে স্থাপনার ওপরের অংশটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিকিমে তিস্তার ওপর একাধিক বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। এরপর পশ্চিমবঙ্গের গাজলডোবায়ও তিস্তার ওপর বাঁধ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত বছর মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছিল চুংথাংয়ে তৈরি আরেকটি বাঁধ। এখনো সেই বাঁধ পুরোপুরি ঠিক করা যায়নি। মঙ্গলবার যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গও তৈরি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
পরিবেশবিদ অরূপ গুহ ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, এমন যে হবে, সে আশঙ্কা ছিলই। পাহাড়ে এবং ডুয়ার্সে তিস্তার ওপর একের পর এক প্রকল্প তৈরি হয়েছে। নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। পরিবেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখন বোঝা যাচ্ছে।
এর আগের এক সাক্ষাৎকারে অরূপ জানিয়েছিলেন, তিস্তার ওপর তৈরি বাঁধগুলোর মেয়াদকাল পূর্ণ হতে চলেছে। অথচ সম্পূর্ণ প্রকল্পই এখনো রূপায়ন হয়নি। ফলে যেকোনো সময় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এদিনের বিপর্যয় তারই ইঙ্গিত।
এদিকে, মঙ্গলবারের ঘটনার ফলে গজলডোবায় চাপ পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ সিকিমে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। তিস্তা নদীতে এখন অনেক পানি। তাই গজলডোবার বাঁধ থেকে পানি ছাড়লে নিচের অংশে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে, এনডিটিভিকেএএ/