ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবিতে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। আগামী সাত দিনের মধ্যে ভোলার গ্যাস ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন থেকে সিলিন্ডারে করে ঢাকায় নেওয়ার চুক্তি বাতিলেরও দাবি করেন তারা।
Advertisement
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে ভোলার ব্যাপারী বাজার সংলগ্ন ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় অফিস ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থী ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন কর্মকর্তা সমঝোতায় বসেন। এ সময় সমঝোতার মাধ্যমে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন থেকে সিলিন্ডারে করে ঢাকায় গ্যাস নেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আরও সাত দিন সময় দেওয়া হয়। আর সাত দিন শেষে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের সঙ্গে ভোলার গ্যাস সিলিন্ডারে করে ঢাকায় নেওয়ার চুক্তি বাতিলের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক তাহিয়াত ইসলাম, এ্যানি আক্তার ও মো. ইয়ামিন জানান, ভোলায় ৩টি গ্যাস ক্ষেত্রের ৯টি কূপে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। কিন্তু ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ ও শিল্পকারখানা করে বেকারত্ব দূর না করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন কোম্পানিকে সিলিন্ডারে করে ভোলা থেকে গ্যাস ঢাকায় নেওয়ার অনুমোতি দেয়। তাই ওই চুক্তি দ্রুত বাতিল করতে হবে।
Advertisement
তারা আরও জানান, ভোলার মানুষের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত ভোলা থেকে গ্যাস নিতে দেবো না। তাই ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের সামনে আমরা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা একত্রিক হয়ে ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।
ভোলার ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের মানবসম্পদ বিভাগ (এইচআর/এডমিন) মো. ফয়সাল আহমেদ জানান, তাদের স্টেশন থেকে গ্যাস নেওয়ার কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে পুলিশের সমঝোতায় আগামী সাত দিন কার্যক্রম সুন্দরমতো চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সাত দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান পাটওয়ারী জানান, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এজন্য শিক্ষার্থী ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমঝোতায় বসি। উভয় পক্ষ সমঝোতায় সাত দিন সময় নেয়। এই সাত দিনও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন থেকে সিলিন্ডারে করে ঢাকায় যাবে গ্যাস। পরবর্তীতে তারা কী করবেন সেটা ওই কোম্পানির ভোলার কর্মকর্তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
অপরদিকে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. অলিউল ইসলাম জানান, বর্তমানে ভোলার পৌরসভা এলাকায় ২ হাজার ৩৭১টি ও বোরহানউদ্দিন পৌরসভা এলাকায় ৫টিসহ সর্বমোট ২ হাজার ৩৭৬টি আবাসিক সংযোগ রয়েছে। আর গ্যাস সংযোগ পাওয়ার জন্য আবেদন জমা আছে ২ হাজার ১৫৭টি ও টাকা জমা আছে ৫৭৭ জন আবেদনকারীর। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত আসলে তারা নতুন করে আবাসিক গ্যাস সংযোগ দেবেন।
Advertisement
তিনি আরও জানান, আবাসিক খাতে ২-৩ মিলিয়ন গ্যাস হলে ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এফএ/এএসএম