জাগো জবস

বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পেতে যা করবেন

মো. রাকিব হাসান খান বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সহকারী পরিচালক’ পদে (২০২৩ ব্যাচ) চাকরি পেয়েছেন। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরপুম্বাইল গ্রামে। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বশরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইলেকট্রিক পাওয়ার মেজর) বিষয়ে স্নাতক পাস করেন।

Advertisement

সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার গল্প ও নতুনদের পরামর্শ নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম—

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পেয়েছেন, অনুভূতি কেমন ছিল?মো. রাকিব হাসান খান: প্রথম চাকরি পাওয়ার অনুভূতিটা সত্যিই অসাধারণ ছিল! রেজাল্ট শিটে নিজের রোলটা দেখার পর মনে হলো এক মুহূর্তেই অনিশ্চিত সেই বেকার জীবন থেকে নতুন একটা জীবনে পা ফেললাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কাজ করার যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবে রূপ নিলো।

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?মো. রাকিব হাসান খান: বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির স্বপ্ন ছিল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট থেকেই। আমি সব সময়ই চেয়েছি, দেশেই সম্মানজনক একটা চাকরি করবো। বিশ্ববদ্যালয়ের সিনিয়রদের যখন এই চাকরি পেতে শুনতাম; তখনই স্বপ্ন দেখতাম এই চাকরির। গ্র্যাজুয়েশন শেষে কোভিড-১৯ এর লকডাউনে বিসিএস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরির প্রস্তুতি শুরু করি। বলা যায়, তখন থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সহকারী পরিচালক’ পদটির প্রতি আমার আলাদা আগ্রহ কাজ করে।

Advertisement

আরও পড়ুন

বাবা বেঁচে থাকলে ভীষণ খুশি হতেন: জাবীর হুসনাইন বিসিএসের পুরো জার্নিটা উপভোগ করছি: ইমাম হোসেন জ্যোতি

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন?মো. রাকিব হাসান খান: গ্র্যাজুয়েশন শেষ হওয়ার পর থেকে কিছুদিন আমার সাবজেক্টিভ বিষয়ে পড়া শুরু করি। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ে একটু পরিবর্তন আনি। তারপর থেকে বিসিএস কেন্দ্রিক পড়াশোনা শুরু করি। প্রস্তুতি আসলে একটা দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার। ইংরেজি আর ম্যাথ বিষয়ে সময় বেশি দিতাম। যাতে কম সময়ের মাঝে পরীক্ষায় ম্যাথ ও প্যাসেজের প্রশ্নগুলোর উত্তর করতে পারি। সব বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক বইপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত পত্রিকা পড়া; বিশেষ করে ডেইলি স্টারের কলাম পড়া, ভোকাব্যুলারি সমৃদ্ধ করা, সাম্প্রতিক ঘটনা স্ট্যাডি এবং সব চাকরির প্রশ্নপত্র সমাধান করেছি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের জবের জন্য ফ্রি হ্যান্ডরাইটিং স্কিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক যে কোনো বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফোকাস লেখার অভ্যাস পরীক্ষার হলে আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। তাই আমার পরামর্শ হবে, যে কোনো পরীক্ষার জন্য ফ্রি হ্যান্ডরাইটিং স্কিলটি অর্জন করা। এতে লেখার গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি টাইম ম্যানেজমেন্ট হয়ে যাবে। যে কোনো ব্যাংকে চাকরি বা বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে প্রিলি রিটেন একই সাথে পড়তে হবে। পড়ার পাশাপাশি প্রতিদিন লেখার অভ্যাস করতে হবে। অপেক্ষাকৃত কম জানা বিষয়ে সময় বেশি দিয়ে পড়তে হবে। আমি এসব নিয়ম ফলো করে প্রস্তুতি নিতাম। বাংলাদেশ ব্যাংকে আমার চাকরির প্রথম পরীক্ষা ছিল। ইনশাআল্লাহ প্রথম ধাপেই সফলতার দেখা পেয়েছি।

জাগো নিউজ: আড়াল থেকে সব সময় কারা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন?মো. রাকিব হাসান খান: আড়াল থেকে সব সময়ই আমার বাবা-মা এবং বড় বোনেরা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। তারা সব সময় মানসিক শক্তি জুগিয়েছেন। তাদের প্রতি এবং আমার বন্ধুদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পেতে নতুনরা কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?মো. রাকিব হাসান খান: নতুনদের জন্য বলতে চাই, লক্ষ্যে ফোকাস করাটা জরুরি। সময় নিয়ে গুছিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। শুধু গাইডে আবদ্ধ না থেকে বরং চলমান ঘটনা সম্পর্কে আপডেটেড থেকে আপেক্ষিক স্ট্যাডি করতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে গ্রুপ স্ট্যাডি খুব ইফেক্টিভ হয়। এককথায়, ধৈর্য নিয়ে কৌশলগতভাবে পড়তে হবে। পড়ার সময় মাথায় রাখতে হবে, যা পড়ছি; তা পরীক্ষার খাতায় উপস্থাপন করতে পারবো কি না। নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে উপস্থাপনা খুবই জরুরি। তাই নিয়মিত লেখার অভ্যাস করতে হবে।

Advertisement

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?মো. রাকিব হাসান খান: বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বড় সুযোগ হলো উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ সুবিধা। সে সুবিধা কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাই। কারণ আমাদের সৎ ও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তই বিনির্মাণ করবে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

এসইউ/এমএস