দেশজুড়ে

অতিবৃষ্টিতে নোয়াখালীর লাখো মানুষ পানিবন্দি

অতিবৃষ্টির কারণে নোয়াখালীর ৯ উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মাইজদী শহরে ১৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতে জেলা শহরের কালেক্টরেট ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জন কার্যালয়, প্রেস ক্লাব, জজকোর্ট ভবন, পৌরসভা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপদ বিভিাগ, জেলা জামে মসজিদসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় পানিবন্দী রয়েছে।

এছাড়া জেলার দ্বীয় উপজেলা হাতিয়া, উপকূলীয় উপজলো কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, সূবর্ণচর, বেগমগঞ্জে চৌমুহনীসহ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে মাছের অসংখ্য ঘের ভেসে যাওয়ার কথা জানিয়েছে খামারিরা।

Advertisement

শহরের ব্যাটারিচলিত রিকশাচালক আবদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, বসতঘর, রান্নাঘরের চুলসহ সব কিছু গত কয়েকদিন পানিতে ডুবে গেছে। খাবার কেনার টাকা নেই তাই রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। এখন রিকশার মোটরে পানি ঢুকে তাও বিকল হয়ে গেছে।

ফকিরপুর এলাকার খোয়াজ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, পানি নিষ্কাশনের খালগুলো দখল-ভরাটে বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের বাড়িঘরসহ পুরো এলাকা গত কয়েকদিন নোংরা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের জীবনযাপন দূরুহ হয়ে পড়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর এলাকার পোলট্রি খামারি নুরুদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ায় খামারের তিন হাজার মুরগী মারা গেছে। এছাড়া ওই এলাকার শত শত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

সেনবাগ উপজেলার কুতুবের হাট এলাকার গৃহিণী নুর নাহার বলেন, টানা বৃষ্টিতে বাড়ির উঠানে পানি জমেছে। রান্নাঘরেও পানি। আজ রান্নাও করতে পারিনি। কলের পানিতে ময়লা আসে।

Advertisement

পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, নোয়াখালীতে বিগত ২০ বছরের তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। আমরা জলাবদ্ধতা রোধ প্রকল্পে শহর ও আশপাশের ১৬১ কিলোমিটার খাল খনন করেছি। এতে সব উপজেলায় পানি নিষ্কাশন হওয়ার কথা। তবে ড্রেন ও নালা রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, নোয়াখালী শহরটি বেশ নিচু হওয়ায় সামন্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়। তবে পানিবন্দী লোকজনের সাহায্যে কাজ করার জন্য প্রশাসনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও খাল বা ড্রেনে বাঁধ থাকলে তা কেটে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এএইচ/এমআইএইচএস/এমএস