বর্ষাকালে কমবেশি সবাই সর্দি-কাশির সমস্যায় ভোগেন। গলা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি, ক্লান্তি ও শরীরে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ হলো ফ্লু সম্পর্কিত। তবে সব সময় এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার মানে এই নয় যে আপনার শরীরে ফ্লুর সংক্রমণ ঘটেছে।
Advertisement
সাধারণ সর্দি মূলত একটি ভাইরাল অসুস্থতা। ফ্লু’র মতোই এটি হাঁচি-কাশির কারণ হতে পারে। তবে সাধারণ সর্দির সমস্যা নিজ থেকেই ২-৩ দিনের মধ্যে সেরে যায়। এরপরেও যদি সর্দি-কাশি না সারে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোন কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে সর্দি-কাশি? রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি)রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি’র লক্ষণকেও সাধারণ ফ্লু ভেবে ভুল করেন সবাই। এটি একটি সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা সাধারণত হালকা সর্দির মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। আর তা এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরেও যায়।
শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই অসুস্থতা গুরুতর রূপ নিতে পারে। ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, নাক দিয়ে পানি পড়া, ক্ষুধা কমে যাওয়া, কাশি, হাঁচি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট হলো আরএসভি’র সাধারণ লক্ষণ।
Advertisement
ফুসফুসে বাতাস বহনকারী ব্রঙ্কিয়াল টিউবগুলো যখন ফুলে যায় তখন শ্লেষ্মা, গলা ব্যথা ও বিরক্তিকর কাশির লক্ষণ দেখা দেয়। এই সমস্যাকে বলা হয় ব্রঙ্কাইটিস। সাধারণত দু’ধরনের ব্রঙ্কাইটিস আছে- তীব্র ব্রঙ্কাইটিস ও ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস।
যদিও আগেরটি বেশি সাধারণ ও উপসর্গগুলো মাত্র কয়েক দিন স্থায়ী হয়। তবে দীর্ঘদিন এ সমস্যার চিকিৎসা করা না হলে তা গুরুতর বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে পরিণত হতে পারে। তাই দীরইদন ধরে খুশখুশে কাশিতে ভুগলে সতর্ক হন।
নিউমোনিয়ানিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলোও সাধারণ ফ্লু ভেবে সবাই ভুল করেন। প্রাথমিকভাবে নিউমোনিয়ার লক্ষণ খুব বেশি তীব্র হয় না। নিউমোনিয়া মূলত একটি সংক্রমণ।
এক্ষেত্রে এক বা উভয় ফুসফুসের বায়ু থলি স্ফীত হয়। এই ফুসফুসের সংক্রমণে কাশি, জ্বর, ঠান্ডা লাগা, ক্লান্তি ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
Advertisement
মেনিনজাইটিস রোগ মেনিনজেস নামক ঝিল্লির প্রদাহের কারণে ঘটে। এই ঝিল্লিই মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডকে রক্ষা করে। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোও অনেকটা ফ্লু’র মতো। যার মধ্যে মাথাব্যথা, জ্বর ও ক্লান্তি অন্তর্ভুক্ত।
সিডিসি’র তথ্য অনুসারে, মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের আশপাশের তরলের ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণের কারণেই মেনিনজাইটিস হতে পারে। এছাড়া আঘাত, ক্যানসার, নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ও অন্যান্য সংক্রমণের কারণেও এই রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।
এইচআইভিসিডিসি এইচআইভিকে (হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস) একটি ভাইরাস হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আক্রমণ করে। এই কঠিন রোগের লক্ষণও মিলে যায় ফ্লুর সঙ্গে।
এইচআইভির ফ্লুজাতীয় লক্ষণ সংক্রমণের পর প্রায় ২-৪ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে। এক্ষেত্রে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, ফুসকুড়ি, রাতে ঘাম বা পেশিতে ব্যথা হতে পারে। বর্তমানে এইচআইভির কোনো কার্যকর নিরাময় নেই। তাই এই রোগ সম্পর্কে সবারই বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জিকেএস