এবার ফিলিপাইনে এমপক্স ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। গত বছরের ডিসেম্বরের পর প্রথমবার সেখানে এমপক্সের নতুন কেস শনাক্ত হলো। সোমবার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি একজন ফিলিপিনো নাগরিক। তার বয়স ৩৩ বছর। তিনি রাজধানী ম্যানিলার বাসিন্দা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দেশের বাইরে কোথাও ভ্রমণ করেননি। খবর আল জাজিরার।
Advertisement
সাম্প্রতিক সময়ে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে এমপক্স ভাইরাস। এ বিষয়ে গত সপ্তাহেই জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ফিলিপাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টেডি হেরবোসা সাংবাদিকদের বলেন, এমপক্স ভাইরাস এখন আমাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। এটা আমাদের সবার জন্যই সতর্কবার্তা।
তিনি জানিয়েছেন, এর আগে ২০২৩ সালেও দেশটিতে এমপক্সের নয়টি কেস শনাক্ত হয়। টেডি হেরবোসা বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণ করেননি। তার মানে এই ভাইরাস ইতোমধ্যেই ফিলিপাইনেই রয়েছে। তবে এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে কোভিড মহামারির সময়ের মতো সীমান্তে একই ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করা হবে না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
Advertisement
এদিকে এমপক্স ভাইরাসের প্রবেশ ও সংক্রমণ ঠেকাতে ছয় মাসের জন্য সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে চীন। দেশটির শুল্ক প্রশাসন জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস এক ঘোষণায় জানায়, এমপক্স ছড়িয়ে পড়া অঞ্চল থেকে আসা মানুষ ও পণ্যসামগ্রীর প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর নজর রাখতে হবে। জ্বর, মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা বা ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ থাকা পর্যটক বা যাত্রীদের চীনে ঢোকার সময় নিজেদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এই কড়াকড়ি আগামী ছয় মাসের জন্য বহাল থাকবে।
বিশ্বে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের কঙ্গোতে এমপক্স নামের সংক্রামক রোগটি শনাক্ত হয়। এরপর ইউরোপ ও এশিয়াতেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কঙ্গো ছাড়াও এখন পর্যন্ত বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, সুইডেন, কেনিয়া ও পাকিস্তানে এমপক্স রোগীর সন্ধান মিলেছে।
এর আগে ২০২২ সালে ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু দেশসহ প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। সেসময়েও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পূর্বে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল এই ভাইরাস। গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এই ভাইরাসের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের সময় কমপক্ষে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে এটি ছড়ায়। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গের পাশাপাশি পুঁজ-ভরা ক্ষত সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাব সামান্য দেখা গেলেও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কঙ্গোতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭০০ মানুষ।
Advertisement
আফ্রিকায় সংক্রমিত এলাকাগুলোতে এমপক্স প্রতিরোধে টিকা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি)। তবে ইসিডিসি বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি এমপক্স পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও এটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।
টিটিএন