বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনে পতন হয়েছে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী আওয়ামী লীগ সরকারের। বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালান শেখ হাসিনা। এই ঘটনা অনুপ্রাণিত করছে পাকিস্তানের ছাত্রদের, বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকদের। এখন তারাও বাংলাদেশের মতো ছাত্রদের হাত ধরে বিপ্লবের আশা করছেন।
Advertisement
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ভেরিফায়েড টুইটার হ্যান্ডেলে গত কয়েকদিনে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে একাধিকবার পোস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ৭ আগস্টের এক পোস্টে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের পরিস্থিতির সরাসরি তুলনা টানে দলটি।
আরও পড়ুন>>
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের অপেক্ষায় পাকিস্তান পাকিস্তানজুড়ে ইন্টারনেট-সোশ্যাল মিডিয়া বিভ্রাট, কারণ ‘অজানা’ পাকিস্তানে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি, ভিপিএনের জন্যই ধীরগতি: মন্ত্রীশেখ হাসিনার ছবি সংযুক্ত ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে কখন কী ঘটেছিল? ১ জুলাই কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৬ জুলাই ছয়জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ তীব্রতর হয়। ১৮ জুলাই সরকার আতঙ্কিত হয়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, কিন্তু আন্দোলন থামেনি।
Advertisement
২১ জুলাই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট চাকরিতে কোটা নিষিদ্ধ করলেও প্রতিবাদীরা বিক্ষোভ থামায়নি। কারণ তারা এটিকে অস্থায়ী সিদ্ধান্ত ভেবেছিল। সবশেষ গত ৪ আগস্ট (প্রকৃতপক্ষে ৫ আগস্ট) আন্দোলন এত তীব্র হয় যে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।’
بنگہ دیش میں کب کیا ہوا؟یکم جولائی کو یونیورسٹی طلباء نے ملازمتوں کے کوٹہ سسٹم پر احتجاج شروع کیا-16 جولائی کو جب چھ افراد کی ہلاکتوں کی خبر پھیلی تو مظاہروں میں مزید شدت آگئی-18 جولائی کو حکومت نے گھبرا کر انٹرنیٹ پر بھی پابندی لگا دی، لیکن مظاہرے پھر بھی نہیں رکے-21 جولائی… pic.twitter.com/ulkcTNC5Dl
— Tehreek-e-Insaf (@InsafPK) August 6, 2024এসব ঘটনা উল্লেখ করে পোস্টটিতে বলা হয়েছে, ‘এগুলোর সঙ্গে আপনি যদি পাকিস্তানের পরিস্থিতির কোনো মিল দেখতে পান, তবে তা কাকতালীয় নয় বা পাকিস্তানে ঠিক একই পরিস্থিতি তৈরি হতে খুব বেশি সময় বাকি নেই। পাকিস্তানে নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে, অর্থাৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। এখন প্রশ্ন হলো, পাকিস্তান দখলকারী গোষ্ঠী কি আল্লাহ তায়ালার এসব নিদর্শন থেকে শিক্ষা নেবে?’
আরেক পোস্টে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং সেসময় সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন খোদ ইমরান খান। তার ভেরিফায়েড টুইটার হ্যান্ডেল থেকে দেওয়া ওই পোস্টে বলা হয়, ‘বাঙালি জনগণ তাদের অধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ়সংকল্পের মাধ্যমে যেভাবে নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা থেকে নিজেদের মুক্ত করেছে, তা প্রশংসনীয়। গোটা আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান যেভাবে অরাজনৈতিক থেকে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন, তারও প্রশংসা করা উচিত।’
Advertisement
আরও পড়ুন>>
সরকার পতন আন্দোলনের ইঙ্গিত দিলেন ইমরান খান ‘প্রতিবেশী দেশগুলোতে অস্থিতিশীলতা ভারতের জন্য উদ্বেগের’ অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানালো যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ইইউইমরান খানের মতে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী ও এর প্রধানকে অবশ্যই ‘অরাজনৈতিক’ থাকতে হবে।
Insaf Students Federation (ISF) has started the movement in Pakistan against violation of Human Rights. Just as the students of Bangladesh overthrew the fascist regime, soon the students in Pakistan will bring a change #ReleaseImranKhan #ISF pic.twitter.com/COP2pPSQAH
— SahibzadaJahangir@PTI (@JahangirChico) August 9, 2024বাংলাদেশের এসব ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পাকিস্তানজুড়ে সররকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পিটিআই’র ছাত্র সংগঠন ইনসাফ স্টুডেন্টস ফেডারেশন (আইএসএফ)। গত ৯ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয় তারা। সেই ভিডিও এক্সে শেয়ার করেছেন পিটিআই নেতা মাজ মালিক এবং ইমরান খানের মুখপাত্র সাহিবজাদা জাহাঙ্গীর। সেটি রিপোস্ট করা হয়েছে পিটিআই’র অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলেও।
পোস্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে ইনসাফ স্টুডেন্টস ফেডারেশন। বাংলাদেশের ছাত্ররা যেভাবে ফ্যাসিবাদী শাসনকে উৎখাত করেছে, শিগগির পাকিস্তানের ছাত্ররাও পরিবর্তন আনবে।
কেএএ/