জাতীয়

দ্রুত বিদ্যুৎ কেনার বিশেষ আইন বাতিল দাবি সিপিডির

দ্রুত বিদ্যুৎ কেনার বিশেষ আইন বাতিলের পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে জবাবদিহি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এক্ই সঙ্গে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সিডিপি।

Advertisement

রোববার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্কার: সিপিডির প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া সিপিডি যেসব বিষয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চায় তার মধ্যে রয়েছে- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা তৈরি, ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা তৈরি।

সংবাদ সম্মেলনে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্কার: অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বিবেচ্য বিষয়’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

Advertisement

তিনি বলেন, সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ এবং ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রথমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ আইন ২০১০ বাতিল করতে হবে। এ আইনের অধীন নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। তাই এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিত। এ আইনে গত ১৪ বছরে দরপত্র ছাড়া বিভিন্ন চুক্তি করা হয়েছে। দুর্নীতির চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে বিভিন্ন নীতি। দেড় থেকে দুই গুণ বেশি চাহিদা হিসাব করে প্রক্ষেপণ তৈরি করা হয়েছে। একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে এমন নীতি তৈরিই করা হয়েছে। নীতি ও আইন খাতে ১৭টি সংস্কার দরকার।

চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১০০ দিনের বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে সিপিডি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে বছরে বিপিডিবির ক্ষতি হচ্ছে ৪৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি এবং বেসরকারি কোম্পানির কাছে বকেয়া বিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রথমে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় ধরনের সংস্কারে মনোনিবেশ করতে হবে। যেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ কেনার চুক্তির জন্য অযাচিতভাবে নির্বাচিত হয়েছে, তাদের সঙ্গে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বাতিল করতে হবে।

এ খাতের জন্য ১৭টি সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে। টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারে জোর দিতে হবে। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিদ্যুৎ খাতে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ অনুযায়ী চুক্তি সংশোধন করলে ভর্তুকির চাপ কমবে। গ্রাহককে বাড়তি দাম দিতে হবে না বলেও আমরা মনে করছি।

Advertisement

সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান সংস্কার করা দরকার। এর মধ্যে আছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা), বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বিইআরসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে ধীরে ধীরে। আইন সংশোধন করে কমিশনকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটিকে যুগোপযোগী করে ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা দরকার।

এতে বলা হয়, বিপিসি ও পিডিবি থেকে নিয়মিত তথ্য পাওয়া যায় না। তথ্য নিয়মিত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। বিপিসির স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়া ত্রুটিযুক্ত। এখানে মুনাফা দেখা হয়েছে, ভোক্তাস্বার্থ দেখা হয়নি। গত পাঁচ বছরে বিপিসি ও পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক সংস্থা দিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা জরুরি।

এসএম/ইএ/জিকেএস