লাইফস্টাইল

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনতে যা পান করবেন

কোলেস্টেরল একটি মোমজাতীয় পদার্থ, যা শরীরের কোষ ও হরমোন তৈরির জন্য অপরিহার্য। অত্যধিক কোলেস্টেরল ধমনীকে সরু, শক্ত ও ব্লক করে দেয়, ফলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। এতে করে হার্ট আরও পরিশ্রম করে রক্ত পাম্প করার জন্য।

Advertisement

অতিরিক্ত কাজের কারণে এক্ষেত্রে হার্ট খুব তাড়াতাড়ি দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীরে খারাপ বা এলডিএল কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এই ধরনের জীবন-হুমকির পরিস্থিতি এড়াতে, নিয়মিত কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিত।

যদি এসব নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে হবে যেমন- সঠিক খাদ্য, ঘুম, ব্যায়াম ও মানসিক সুস্থতা। কেউ যদি উচ্চ কোলেস্টেরলে ভোগেন তাহলে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় কিছু পানীয় রাখতে হবে। যা উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। জেনে নিন কী কী-

টমেটোর রস

টমেটো লাইকোপেন সমৃদ্ধ। এই যৌগ লিপিডের মাত্রা উন্নত করে ও এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া টমেটোর রস কোলেস্টেরল কমানোর ফাইবার ও নিয়াসিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস।

Advertisement

২০১৫ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২৫ জন নারী (২০-৩০ বছর বয়সী ও বডি মাস ইনডেক্স স্কোর কমপক্ষে ২০) যারা ২ মাস ধরে প্রতিদিন ২৮০ মিলিলিটার টমেটোর রস পান করায় তাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক কমেছিল।

সয়া দুধ

সয়াতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে। তাই সয়া মিল্ক কোলেস্টেরলের মাত্রা আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। চর্বিযুক্ত ক্রিম বা অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের বদলে রাখতে পারেন স্বাস্থ্যকর সয়া দুধ। তবে সয়া দুধ কেনার আগে সেটি টাটকা ও অতিরিক্ত চিনি, লবণ বা চর্বিযুক্ত যেন না হয় তা দেখে কিনুন।

ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এর পরামর্শ অনুযায়ী, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল কম আছে এমন খাবার উচিত। সে অনুযায়ী, দৈনিক ২৫ গ্রাম সয়া প্রোটিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন ঝাল খাওয়া শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ?দুপুরের ঘুম শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ? গ্রিন টি

সবুজ চায়ে ক্যাটেচিন, এপিগালোকাটেচিন গ্যালেট ও অন্যান্য উপকারী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যৌগ আছে। যা শরীরের ‘খারাপ’ এলডিএল ও মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

Advertisement

২০১৫ সালের এক সমীক্ষায়, বিজ্ঞানীরা ইঁদুরকে ক্যাটেচিন ও এপিগালোকাটেচিন গ্যালেটে মিশ্রিত পানি পান করানো শুরু করেন নিয়মিত। ৫৬ দিন পরে তারা লক্ষ্য করেন দুই গ্রুপের ইঁদুরের মধ্যে যাদের কোলেস্টেরল বেশি ছিল তাদের মধ্যে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রায় ৩০.৪ শতাংশ কমে গেছে।

ওটসের পানীয়

ওটস বিটা-গ্লুকান সমৃদ্ধ, যা অন্ত্রে জেলের মতো পদার্থ তৈরি করে ও পিত্ত লবণের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এটি আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ২০১৮ সালের একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ওটসের পানীয় অন্যান্য ওটসের খাবারের চেয়ে কোলেস্টেরলকে আরও দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।

কোকো পানীয়

কোকো ফ্ল্যাভানল (ফ্ল্যাভোনয়েডের একটি উপগোষ্ঠী) নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। কোকোতে উচ্চ মাত্রার মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড আছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করে।

ডার্ক চকোলেটের প্রধান উপাদান কোকো। তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে কোকো পানীয় গ্রহণ করছেন সেগেুলোতে অতিরিক্ত লবণ, চর্বি ও চিনিযুক্ত চকলেট যেন না থাকে। প্রক্রিয়াজাত চকোলেটযুক্ত পানীয়তে উচ্চ মাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।

২০১৫ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৫০ মিলিগ্রাম কোকো ফ্ল্যাভানলযুক্ত পানীয় একটানা এক মাসের জন্য দিনে দুবার পান করলে ‘খারাপ’ এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে ‘ভাল’ এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/জেআইএম