বিনোদন

পাকিস্তানের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন বাংলাদেশের শবনম

ঢাকাই সিনেমা যাদের হাত ধরে এগিয়েছে, তাদের অন্যতম শবনম। তিনি ষাট দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এদেশের সিনেমাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তার অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।

Advertisement

উপমহাদেশের বরেণ্য অভিনেত্রী শবনম। তার ছয় দশকের বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্রজীবন সত্যিই গল্পের মতো মনে হয়। পাকিস্তানের সিনেমায় অবদানের জন্য সে দেশে তাকে ‘মহানায়িকা’ বলা হয়। তিনি গত বছর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ লাভ করেছেন।

নির্মাতা এহতেশাম পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমার একটি গান করে ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করেন শবনম। মানুষ এখনও গুনগুন করেন ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা, রূপের জাদু এনেছি’। এ রকম অনেক সিনেমায় অভিনয় করে রূপনগরের হয়ে দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন শবনম।

এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম পাকিস্তানের চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। সেখানে তিনি দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছেন। আজ (১৭ আগস্ট) বাংলা চলচ্চিত্রের এ কিংবদন্তিসম অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৪১ সালের আজকের দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

পাকিস্তানে আটকে আছেন অভিনেত্রী শবনম ঝর্ণা বসাক থেকে কিংবদন্তি শবনম হয়ে ওঠার গল্প

অভিনেত্রী শবনমের আসল নাম ‘ঝর্ণা বসাক’। তিনি সিনেমায় শবনম নামেই পরিচিতি লাভ করেন। বাংলা সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও স্বাধীনতার আগে উর্দু চলচ্চিত্রে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের চলচ্চিত্রের সব পুরস্কার ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন তিনি।

অভিনেত্রী শবনম ১৯৬১ সালে বাংলা চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’-এর মাধ্যমে দর্শকদের কাছে পৌঁছান। ১৯৬২ সালে উর্দু সিনেমা ‘চান্দা’র মাধ্যমে পাকিস্তান জুড়ে অল্প সময়ের মধ্যে শীর্ষ অভিনেতীর আসন অলংকৃত করেন। পরের বছর ‘তালাশ’ সিনেমার মতো ব্যবসাসফল সিনেমা দিয়ে ষাটের দশকেই শবনম পাকিস্তানের সেরা অভিনেত্রী হয়ে যান।

শবনম অভিনীত ‘আয়না’ সিনেমাটি পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দীর্ঘদিন প্রদর্শনের রেকর্ড সৃষ্টি করে। ৬০ বছরের বেশি অভিনয় জীবনে প্রায় ১৮০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পাকিস্তান চলচ্চিত্রের সম্মানসূচক নিগার পুরস্কার পেয়েছেন এগারোবার ও সহঅভিনেত্রী হিসেবে পেয়েছেন একবার। তিনবার পেয়েছেন পাকিস্তানের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

Advertisement

শবনম অনেকদিন চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯৯ সালে কাজী হায়াত-মান্না জুটির ‘আম্মাজান’ সিনেমা দিয়ে তিনি রূপালি পর্দায় হাজির হন। এ সিনেমা মুক্তির পর তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। সিনেমায় শবনমের ‘আম্মাজান’ চরিত্রটি মানুষের মনে দাগ কাটে। এরপর থেকে সবার কাছে তিনি ‘আম্মাজান’ হয়ে ওঠেন।

শবনম অভিনীত উল্লেখযোগ্য বাংলা সিনেমার মধ্যে রয়েছে, ‘সহধর্মীনি’, ‘সন্ধি’, ‘শর্ত’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘রাজা সন্ন্যাসী’, ‘নাচের পুতুল’, ‘নবারুণ’, ‘জুলি’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘চোর’ কখনো আসেনি’, ‘কারণ’, ‘এদেশ তোমার আমার’। অন্যদিকে উর্দু সিনেমার মধ্যে রয়েছে, ‘সমন্দার’, ‘সাগর’, ‘হামদোনো’, ‘রিশতা’, ‘মিস হিপ্পি’, ‘ভুল’, ‘বন্দিস’, ‘বেগানা’, ‘পাকিজা’, ‘পেহজান পয়সে’ ইত্যাদি।

এমএমএফ/আরএমডি/এএসএম