২০১১ সালে ঢাকায় এসেছিলেন লিওনেল মেসি এবং তার দল আর্জেন্টিনা। ঢাকার বঙ্গবন্ধু ফুটবল স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল নাইজেরিয়া। ঢাকায় আর্জেন্টিনার ওই সফরে স্পন্সর করেছিল বেক্সিমকো গ্রুপ। তখনই স্পন্সরের টাকা নিয়ে একটা ঝামেলা তৈরী হয়েছিল।বেক্সিমকো গ্রুপ মেসিদের ম্যাচ আয়োজনের জন্য ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা লোন নিয়েছিল আইএফআআইসি ব্যাংক থেকে। কিন্তু আর্জেন্টিনার ঢাকা সফর শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই টাকা ‘লস হয়েছে’- এই অজুহাতে আর পরিশোধ করেনি। সেই ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা নিয়েই আজ একটু সরগরম হয়েছে বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। যদিও প্রথম থেকে ধারনা করা হয়েছিল, বাঁচাও ফুটবল পরিষদ যেভাবে বাফুফের বর্তমান কমিটির বিপক্ষে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনছিল, তাতে এজিএম বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠবে।তবে অনাকাংখিত কোন ঘটনার জন্ম হয়নি। সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া বাফুফে এজিএম। যা একটু সরগরম হয়েছে সেই আট কোটি টাকা পরিশোধ করা না করা নিয়ে।বাফুফের বর্তমান কমিটির যুক্তি, যেহেতু আমরা স্পন্সর বিক্রি করেছি, সেহেতু তারা ধার করে টাকা এনেছে নাকি নিজেরা দিয়েছে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়; কিন্তু প্রতিপক্ষের দাবি, এই টাকা পরিশোধের দায়িত্ব নিতে হবে বাফুফের বর্তমান কমিটিকেই।কাজী সালাউদ্দিন কমিটিও এই দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছে এবং টাকাটা বেক্সিমকো পরিশোধ না করলে তারাই পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।এজিএম শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কাজী সালাউদ্দিন অবশ্য আট কোটি টাকা নিয়ে মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘এজিএম খুব ভালো হয়েছে।’সালাউদ্দিনের কাছে প্রশ্ন করা হয়, তারা বলছেন যে এজিএম নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। আপনি কিছু বলুন এ নিয়ে! সালাউদ্দিন বলেন, ‘এজিএমে দশটা-বারোটা প্রশ্ন উনারাই করছেন। উনামের প্রশ্ন দেয়া হয়েছে। উনারাই উত্তর পেয়ে গেছেন। এজিএম তো একদম ঠাণ্ডাভাবে শেষ হয়েছে। এতো সুন্দর, নরমাল এজিএম আমি আগে কখনও দেখিনি।’অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন বলেন, ‘তাদেরকে বিস্তারিত সব কিছু জানানো হয়েছে। তাদেরকে যা যা দরকার ছিলো সবই দেয়া হয়েছে। উনারা কোন অভিযোগ করেননি।’সেই আট কোটি টাকার লোনের বিষয়ে আরেক সভাপতি প্রার্থী কামরুল আশরাফ খান বলেন, ‘জামানত ছাড়া তো কোন লোন হয় না। জামানত হিসেবে যদি তারা ফুটবল ফেডারেশন দিয়ে থাকে, তাহলে তো এক সময় টাকা পরিশোধ করতে না পারলে ফেডারেশন ভবন নিলামে উঠবে। তখন একে রক্ষার নিশ্চয়তা কে দেবে? ওনাদের কাছে ব্যাংক যে আট কোটি টাকা পাবে, সেইটা ওনারা ব্যাংক থেকে কিভাবে নিয়েছে, তা জানি না।’আপনাদের কী প্রতিশ্রতি দিয়েছে বর্তমান কমিটি? এ প্রশ্নের জবাবে কামরুল আশরাফ খান বলেন, ‘তাদের জবাব ছিল আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি; কিন্তু তারা কী ব্যবস্থা নেবেন? এজিএম মানেই তো সব অনুমোদন দেয়া। তাহলে তারা কী অনুমোদন দেবেন? এখন যদি এটা তারা অনুমোদন করে নেয়, তাহলে তার দায়-দায়িত্ব কিন্তু বাফুফেরই থেকে গেলো।’উল্লেখ্য, আট কোটি লোন নেয়া হয়েছিল আইএফআইসি ব্যাংক থেকে। যার মালিকানা প্রতিষ্ঠান আবার বেক্সিমকো গ্রুপ। সে কারণে, আইএফআইসি ব্যাংক তাদের কাছ থেকে কোন সুদ গ্রহণ করেণি। না হয়, ৮ কোটি টাকা সুদসহ বেড়ে দাঁড়াত কয়েকগুণ।আইএইচএস/আরআর/আরআইপি
Advertisement