জাতীয়

টুকু, পলক ও সৈকতকে নেওয়া হচ্ছে আদালতে

জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে ডিবি কার্যালয় থেকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেল ৩টা ৮ মিনিটের দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে প্রিজনভ্যানে তাদের আদালতের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।

গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাদের নেওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে।

পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শামসুল হক টুকু, জুনাইদ আহমেদ পলক ও তানভীর হাসান সৈকতকে রাজধানীর পল্টন এলাকায় কামাল মিয়া (৩৯) নামে এক রিকশাচালককে হত্যার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

গত ১৯ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় গুলিতে নিহত হন রিকশা চালক কামাল মিয়া (৩৯)। এ ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের আসামি করে ২০ জুলাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩৬)।

আরও পড়ুন

শামসুল হক টুকু, পলক ও ছাত্রলীগ নেতা সৈকত ডিবি কার্যালয়ে  যে মামলায় গ্রেফতার হলেন টুকু, পলক ও ছাত্রলীগ নেতা সৈকত   

এরই মধ্যে গ্রেফতার তিনজনের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সেই আবেদন শুনানিতে হাজির করতেই তাদের ডিবি কার্যালয় থেকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে।

পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেন্টু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, গ্রেফতারের পর তাদের ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, গত ১৯ জুলাই পল্টনে এক রিকশাচালককে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় শামসুল হক টুকু, জুনাইদ আহমেদ পলক ও তানভীর হাসান সৈকতকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে, গত মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গত ৬ আগস্ট বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দিল্লি যাওয়ার সময় জুনাইদ আহমেদ পলককে আটকে দেওয়া হয়েছিল।

১৩ আগস্ট জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

জুনাইদ আহমেদ পলক ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সরকারের ডাক এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এ রাজনীতিক।

আরও পড়ুন

টুকু, পলক ও সৈকতকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক ১০ দিনের রিমান্ডে পলক ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ      

গ্রেফতার শামসুল হক টুকু দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। শামসুল হক টুকুর পৈতৃক বাড়ি পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার বৃশালিখা গ্রামে। তিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একসময় বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পেশায় আইনজীবী শামসুল হক টুকু রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের বিরুদ্ধে।

সেদিন শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা হয়। ছাত্রীদেরও মারধর করা হয়। হামলার সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কোনো কোনো নেতাকর্মীর কাছে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র।

৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর মন্ত্রী, এমপি এবং আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী পালানোর চেষ্টা করেন। কেউ কেউ আত্মগোপনে চলে যান।

টিটি/এমকেআর/জিকেএস