রাজধানীর পল্টনে এক রিকশাচালককে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে। একই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকেও ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
Advertisement
গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এ তিন নেতাকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেন্টু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘গ্রেফতারের পর ডিবি কার্যালয়ে তাদেরকে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে আজ তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই পল্টনে এক রিকশাচালককে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় শামসুল হক টুকু, জুনাইদ আহমেদ পলক ও তানভীর হাসান সৈকতকে গ্রেফতার করা হয়।’
Advertisement
এদিকে, গত মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গত ৬ আগস্ট বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দিল্লি যাওয়ার সময় জুনাইদ আহমেদ পলককে আটকে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন
এবার টুকু ও পলক গ্রেফতার যে মামলায় গ্রেফতার হলেন টুকু, পলক ও ছাত্রলীগ নেতা সৈকত সালমান এফ রহমান-আনিসুল হককে ডিম ও জুতা নিক্ষেপএদিকে ১৩ আগস্ট জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
Advertisement
জুনাইদ আহমেদ পলক ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সরকারের ডাক এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এ রাজনীতিক।
গ্রেফতার শামসুল হক টুকু দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। শামসুল হক টুকুর পৈতৃক বাড়ি পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার বৃশালিখা গ্রামে। তিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একসময় বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পেশায় আইনজীবী শামসুল হক টুকু রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের বিরুদ্ধে।
সেদিন শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা হয়। ছাত্রীদেরও মারধর করা হয়। হামলার সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কোনো কোনো নেতাকর্মীর কাছে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর মন্ত্রী, এমপি এবং আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী পালানোর চেষ্টা করেন। কেউ আবার আত্মগোপনে চলে যান।
টিটি/কেএসআর/এএসএম