হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। আজ (১৪ আগস্ট) বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডি-৩২-নম্বরের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের বাইরে স্মৃতিফলকে মোমবাতি প্রজ্বলন করতে গেলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তিনি নাক, মুখ ও মাথায় আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
Advertisement
আগামীকাল ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজন করছিলেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, শিল্পী মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজন। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক এসে রোকেয়া প্রাচীর ওপর চড়াও হন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অভিনেত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাকে চারপাশ থেকে এলোপাতাড়ি মারছিল। বলছিল সতেরো বছর তোরা খেয়েছিস, এখন আমরা খাব। আমি বারবার মাথায় আঘাত ঠেকাচ্ছিলাম।’
রোকেয়া প্রাচী জানান, আগামীকাল সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বেদি প্রস্তুত করছিলেন তারা। দিনব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পর সেখানে বঙ্গবন্ধুর একটি ছবি স্থাপন করা হয়। সন্ধ্যায় সেই ছবি ছুঁড়ে ফেলে রোকেয়ার ওপর হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ঘেরা একটা জায়গায় কীভাবে আমার ওপর হামলা চালানো হল!’
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ না গেলে তিনি একাই শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ডাক না দিলে ১৯৭১ হতো না, আমরা বাংলাদেশ পেতাম না। আমরা অকৃতজ্ঞ না, আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি, আমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। আমি যাব, আমরা যাব, আমরা সবাই যাব ধানমন্ডি বত্রিশে। পোড়া বাড়িতে গিয়ে আমরা শ্রদ্ধা জানাবো। যদি কেউ না যায়, ঠিক করেছি আমি একাই যাব শ্রদ্ধা জানাতে।’
Advertisement
আরও পড়ুন:
রোকেয়া প্রাচী কি তবে একাই যাচ্ছেন ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে বিটিভিতে ফেরদৌস, রিয়াজ, নিপুণরাদীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রোকেয়া প্রাচী। দলের বিভিন্ন কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে ফেনী-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি।
বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘জয় পরাজয়’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে টিভিনাটকে অভিষেক হয় রোকেয়া প্রাচীর। ১৯৯৭ সালে ‘দুখাই’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তার যাত্রা শুরু হয়।
সংযোজন:
Advertisement
খবরটি প্রকাশের পর জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত চারুশিল্পী মনিরুজ্জামানের। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘রোকেয়াকে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে। তার আঙুল ফেটে গেছে। সে আরও অনেক জায়গায় আঘাত পেয়েছে। আমি তাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছি। আমার ওপরেও আক্রমণ করা হতো। কিন্তু কয়েকজন ছেলেকে বলতে শুনেছি, “ওনাকে কিছু বলিস না”।’
মনিরুজ্জামান জানান, সেখানে তার আঁকা বঙ্গবন্ধুর একটি চিত্রকর্ম শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া তরুণ শিল্পী সাহাবুদ্দিনের তৈরি বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্যও তারা নিয়ে গিয়েছিলেন। দুর্বৃত্তরা সেগুলোও নষ্ট করেছে। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবিটা আমি শেষ করতে পারিনি। কিছু কাজ বাকি ছিল, সিগনেচার করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো আমাদের অধিকার। এ রকম হামলা মেনে নেওয়া যায় না।’
এমআই/আরএমডি/জিকেএস