জাতীয়

পদোন্নতি চাইলেন ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত উপসচিবরা

প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া ২৫ ক্যাডারের বে-আইনিভাবে পদোন্নতিবঞ্চিত ১৩ থেকে ২২তম ব্যাচের উপসচিবরা যুগ্মসচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি চাইলেন।

Advertisement

সরকারি কর্মকমিশনের মেধাতালিকা অনুযায়ী নিজ নিজ ব্যাচের সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা নিশ্চিত করে এ পদোন্নতি দিতে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন এ উপসচিবরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সচিবালয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্য সম্পাদনের জন্য উপসচিব ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সিনিয়র সার্ভিস পুল গঠন করা হয়। ‘সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২’ অনুযায়ী প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ২৫টি ক্যাডার হতে ২৫ শতাংশ উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে এ পুল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যদিও প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪ হাজার ৮৯৯ জন (৯ দশমিক ৬২ শতাংশ) এবং অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪৬ হাজার ২৩ জন (৯০ দশমিক ৩৮ শতাংশ)।

এতে আরও বলা হয়, পরবর্তী পদোন্নতি, অর্থাৎ যুগ্মসচিব ও এর ওপরের পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পিএসসির সুপারিশ পাওয়া নিজ নিজ ব্যাচের সম্মিলিত মেধাতালিকা, সরকারি চাকরি আইন, পদোন্নতি বিধিমালা, সুপ্রিমকোর্টের রায় কোনো কিছুই মানা হয় না। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের সব কর্মকর্তার নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে পদোন্নতি নিশ্চিত থাকলেও অন্য ২৫টি ক্যাডারের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক কোটা আরোপ করে প্রশাসন ক্যাডারের অনেক জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে স্বেচ্ছামূলক নামমাত্র ১০ থেকে ১২ শতাংশ পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ থেকে ২২ ব্যাচের অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য দুই শতাধিক কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠতা হারিয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে তাদের অনেক জুনিয়র কর্মকর্তার অধীনে কাজ করতে হচ্ছে।

Advertisement

এতে একদিকে যেমন গোটা জনপ্রশাসন মেধাহীন ও দক্ষ জনবলশূন্য হয়ে পড়েছে, অপরদিকে জনপ্রশাসনে চেইন অব কমান্ডও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বিগত সরকার আমলে প্রশাসন ক্যাডারের দুর্বৃত্ত কতিপয় কর্মকর্তা এ বেআইনি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একটি মেধাশূন্য, মেরুদণ্ডবিহীন, রাজনৈতিক পদলেহনকারী জনপ্রশাসন তৈরি করেছে। তাদের প্রেতাত্মা এখনও সক্রিয় থেকে একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে, যা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল বর্তমান সরকারের নীতি-আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কার্যত ‘প্রশাসন’ ক্যাডারের স্বার্থরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, ফলে সরকারের স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে এরই আগেই জনপ্রশাসন সিনিয়র সচিব বরাবরে আবেদন করে এসএসবির সব সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুলিপি দেওয়া সত্ত্বেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

‘সিনিয়র সার্ভিস পুলে মানবসম্পদের অব্যবস্থাপনার কারণে জনপ্রশাসন মেধাশূন্য ও অদক্ষ হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটা রাষ্ট্র।’

এমতাবস্থায় অতি দ্রুত ক্যাডার নির্বিশেষে বৈষম্যহীন মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া ২৫ ক্যাডারের বে-আইনিভাবে পদোন্নতি বঞ্চিত ১৩ থেকে ২২ তম ব্যাচের উপসচিবদের পিএসসির মেধাতালিকা অনুযায়ী স্ব-স্ব ব্যাচের সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা নিশ্চিত করে যুগ্মসচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার জোর দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।

Advertisement

আরএমএম/এমএএইচ/এএসএম