২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মাত্র দুই ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ। তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাখান করে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন পরাজিত এ প্রার্থী। পরে বিষয়টি আদালেত গড়ায়। আদালতের আদেশে পুন গণনায় বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে চার ভোট বেশি পান পরাজিত প্রার্থী ফারুক আহমদ। এর পর গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর আদালত তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
Advertisement
আদালতের রায়ের ১১ মাসের মাথায় আজ পৌরসভার মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন ফারুক আহমদ। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকালে মেয়র হিসেবে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিকী তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
এরমধ্য দিয়ে ভোটের সাড়ে তিনবছর পর জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলেন ফারুক আহমদ। বিধিমোতাবেক আর মাত্র দেড় বছর সময় রয়েছে জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের। সে হিসেবে এ দেড়বছর দায়িত্ব পালন করবেন নতুন মেয়র ফারুক।
তবে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমি আজ শপথ গ্রহণ করেছি। সরকারের কাছে দাবি আজ থেকে পাঁচ বছর মেয়াদ শুরু হবে হবে এ পৌরসভার। কারণ এতো দিন আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে।
Advertisement
মামলা সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আহাদকে দুই ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব। তখন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ। ওই বছরই তিনি সিলেট যুগ্ম-জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে পাঁচটি ভোট কেন্দ্রের ভোট পুনগণনা চেয়ে মামলা করেন।
পরে আদালত বাদীপক্ষের সাক্ষী ও বিবাদী পক্ষের সাফাই সাক্ষী গ্রহণ করে ভোট পুনরায় গণনার নির্দেশ দেন। গণনায় ফারুক আহমদ তার জগ প্রতীকে চার ভোট বেশি পান।
কারচুপির অভিযোগে করা মামলায় উভয় পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় আদালতে ভোট পুনগণনা করা হয়। তাতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদের বৈধ ভোট হয় দুই হাজার ৭১ আর আব্দুল আহাদের ভোট হয় দুই হাজার ৬৭। ফারুক চার ভোটে বিজয়ী হন।
বাদী ফারুক আহমদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী গোলাম রব্বানী চৌধুরী ও দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল সিলেটের পিপি অ্যাডভোকেট আলী মর্তুজা কিবরিয়া। বিবাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী শামসুল হক।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কাছে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। শপথগ্রহণ শেষে ফারুক আহমদ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আদালত যে মানুষের শেষ ভরসা, তা আবারও প্রমাণ হলো। ভোট পুনঘণনার রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনি লড়াই করেছিলাম।
তিনি বলেন, যাদের কারচুপির কারণে প্রায় সাড়ে তিন বছর তিনি দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাদের বিচার করতে হবে। এবং তাকে ক্ষতিপূরণসহ তার পূর্ণ মেয়াদ ফিরিয়ে দিতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
আহমেদ জামিল/আরএইচ/এএসএম